মই বেয়ে উঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ দেখলেন আইনমন্ত্রী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার রাজাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পরিদর্শনে গিয়ে মন্ত্রী মই বেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের দেয়ালের ঢালাইয়ের মান খতিয়ে দেখেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কোথায় কী পরিমাণ নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে, তার বর্ণনা দেন।

সম্প্রতি আখাউড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমানা আক্তার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলামকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

আখাউড়ায় ৮৮টি ঘরের নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক
আখাউড়ায় কয়েকটি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম। এসময় একাধিক ঘরের গ্রেড ভিম ও লিংটার ভেঙে দেখেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সাতপাড়ায়
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অন্যান্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, যাঁরা জড়িত আছেন, যাঁদের জড়িত দেখা গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আরও যদি কেউ জড়িত থাকেন অথবা এই আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকেন, সেটা বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পদ্মা সেতু থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে সম্পদ করা হচ্ছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওনারা (বিএনপি) মিথ্যা বলছেন। সন্ত্রাস করতে করতে তাঁরা (বিএনপি) অভ্যস্ত। বাংলাদেশের কিছু ভালো হোক, সেটা ওনারা চান না। এ জন্য তাঁরা হিংসায় আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার যে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বানাতে পেরেছে এবং সেটা বাংলাদেশের জনগণের অর্থায়নে, সেটা ওনাদের সহ্য হচ্ছে না।’ আনিসুল হক বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষকে অনুরোধ করব, যেন এসব অপপ্রচারে কান না দেয়।’

শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে ট্রেনে আখাউড়ায় পৌঁছান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তিনি আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর এলাকার রাজাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনে যান।

এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাসুদ উদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলায় ইউএনও রুমানা আক্তার ও এসি ল্যান্ড সাইফুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গত ২৮ এপ্রিল সরেজমিন পরিদর্শন করে আখাউড়া উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম পেয়েছে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। নিয়ম অনুযায়ী রড না দেওয়াসহ অন্যান্য অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ৮৮টি ঘরের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। পরে ইউএনও রুমানা আক্তারকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলামকে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় বদলি করা হয়।