উপকূলীয় এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে

ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানার শঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নগর ও জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার লোকজন।

শুক্রবার (৩ মে) রাত ৮টা পর্যন্ত ২৯ হাজার ২০০ লোক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এর আগে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৮ লাখ লোকের জন্য ২ হাজার ৭৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী চট্টগ্রামে আঘাত হানার শঙ্কায় উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নিতে বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারেও সারাদিন মাইকিং কার্যক্রম চালায় জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম। এ সময় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কাছের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ জানান তারা।

তিনি বলেন, রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ হাজার ২০০ লোক অবস্থান নিয়েছেন। এরমধ্যে সন্দ্বীপ, বাঁশখালী ও সীতাকুণ্ডের লোকজন বেশি। তবে ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে গেছে, ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রামে আঘাত করবে না- এমন সংবাদের কারণে অনেক লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি। তবে ভারি বৃষ্টি কিংবা ঝড়ো হাওয়ার আভাষ পেলে তাদেরও আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, যারা আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছি আমরা। তাদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে জেলায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নগরে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের সহকারী কমিশনারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় রেড ক্রিসেন্টের ১০ হাজার ও সিপিপির ৬ হাজার ৬৬০ স্বেচ্ছাসেবক, ২৮৪টি মেডিকেল টিম, পর্যাপ্ত ওষুধ, ৫০ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ১ হাজার ৪০০ পিস হাইজিন কিডস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংগ্রহ করা হচ্ছে আরও ১ লাখ পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট।

এছাড়াও সহায়তা দিতে নগদ অর্থ, ৪২৭ মেট্রিক টন চাল, ৭০০ বান্ডিল ঢেউটিন, ৬ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রেখেছে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় ২৭টি পানিবাহী গাড়ি, ৭২টি টু-হুইলার, ৩০টি টানা গাড়ি, ৮টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দীন  জানান, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৫১৬ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং ১০০০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।