কলিং অ্যাপ আলাপ-এর এক বছর পূর্তি হলো

দেশীয় ওটিটি (ওভার দ্য টপ) কলিং অ্যাপ আলাপ-এর এক বছর পূর্তি হলো। এর চার মাস আগেই বিনিয়োগ তুলে আনতে পেরেছে অ্যাপটি। যুক্ত হচ্ছে আরও নতুন পরিষেবা। বলা যায় এক বছরেই বেশ খানিকটা এগিয়েছে আলাপ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) নেটওয়ার্কে চালু করা অ্যাপটিতে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যবহারকারী ছিল ৮ লাখ ৭ হাজার ৫৮৭ জন। অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে দেশীয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রীভ সিস্টেমস লিমিটেড।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিটিসিএল-এর মূল শক্তির জায়গা ল্যান্ডফোন। মৃতপ্রায় এই ফোনের সংযোগ যদি আলাপে যুক্ত করা যায় তাহলে এর জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।

উদাহরণ হিসেবে তারা বলছেন, ধরা যাক কারও বাসার ল্যান্ডফোনে কল এলো। ওই সময় বাসায় কেউ নেই। কলটি যদি আলাপ ব্যবহারকারীর অ্যাপে আসে, তবে সহজে কাঙ্ক্ষিতজনকে পাবেন কলার।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আলাপ অ্যাপ নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। নানা পরীক্ষা চালাচ্ছি। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টাও চলছে।’

‘বাসা-বাড়ির ল্যান্ডফোনে যে কল আসে তা মোবাইল ফোনে ইন্সটল করা আলাপ অ্যাপে আনা যায় কিনা সেটাও ভেবে দেখা হচ্ছে। এমনটা হলে তা যুগান্তকরী কাজ হবে।’

২০২১ সালের ৩ এপ্রিল আলাপ-এর উদ্বোধন হয়। বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয় ওই বছরের ২৬ মার্চ।

বিটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন জানান, অ্যাপটিতে ৫ জন ভিডিও কনফারেন্স করতে পারবেন। রয়েছে এক সেকেন্ড পালস। আছে মেসেজ পাঠানো ও কল ফরোয়ার্ড সুবিধা।

আলাপ-এর ডেস্কটপ ভার্সন চালু করা হয়েছে উল্লেখ করে রফিকুল মতিন বলেন, কম্পিউটার থেকে আলাপের সব ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে।

‘আলাপ আরও জনপ্রিয়তা পাবে যদি ল্যান্ডফোনের কল আলাপে রিসিভ করার সুযোগ থাকে। এটা এখনও করা যাচ্ছে না। কল ট্রান্সফারের জন্য আলাদা টাকা দিতে হবে (তৃতীয় পক্ষকে)।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিটিআরসির কাছে থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এখনও এ বিষয়ক কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।’

আগের চেয়ে কল ভলিউম বেড়েছে উল্লেখ করে বিটিসিএল এমডি বলেন, কলরেট ৩০ পয়সা হলে ভালো হতো। বেশি কল আসতো। যারা আলাপ ব্যবহার করে তারা লো ডাটা (কম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী) ব্যবহার করেন। ফলে কলরেট বেশি হওয়ায় কলের হার বাড়ে না। ৩০ পয়সায় শুরু হলেও পরে বিটিআরসি তা বাড়িয়ে ৪০ পয়সা করে। যে কারণে কল কমেছে।

বিটিসিএল এমডি এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। কলরেট পুনর্বিবেচনার বিষয়ে তিনি আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন।

রীভ সিস্টেমস-এর গ্রুপ সিইও এম রেজাউল হাসান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের তৈরি ওটিটি কলিং অ্যাপ বিশ্বের বিভিন্ন টেলকো ব্যবহার করে। তবে আলাপ অ্যাপে অনেক অভিনব সার্ভিস আছে। আরও সেবা যুক্ত করার অপশন আছে।

আলাপের পাশাপাশি দেশীয় অন্যান্য কলিং সার্ভিসও (ইন্টারক্লাউডের ব্রিলিয়ান্ট, আম্বার আইটি ও লিংক থ্রি) দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে এরই মধ্যে ব্যবসায়িক সফলতা পেয়েছে আলাপ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কল ফরোয়ার্ডিং ও ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস আলাপ অ্যাপে বিল্টইন রয়েছে। চাইলেই বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ তা ব্যবহার করতে পারেন।