“চলো সবাই প্রাণের উৎসবে, মাতি উল্লাসে” এই স্লোগান কে সামনে রেখে নানা আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশে হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৬ ইং এসএসসি ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনমিলনী ২০২২ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
সম্প্রতি সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্ব-পরিবারে অংশগ্রহনের মাধ্যমে এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় নিজ বিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষকরা ইন্তেকাল করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন শেষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত শনিবার ১২ মার্চ গৃহিত কর্মসূচীর মধ্যে ছিলো, সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে সকাল ৯.৩০ মিনিটে ব্যান্ড পার্টির সাথে আনন্দ র্যালী, স্মৃতিচারণ, মধ্যাহ্ন ভোজ, শর্টপিচ ক্রিকেট, চেয়ার খেলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র্যাফেল ড্র,। সবশেষে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে জয়ী হওয়াদের পুরস্কার বিতরণ ও ওই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ৯৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.আতাউর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে ও ৯৬ ব্যাচের মো.আরিফের প্রানবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাবু গোবিন্দ প্রসাদ মহাজন। পরে গান, আবৃত্তি, গল্প, আড্ডা আর স্মৃতিচারণায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা হারিয়ে যান পঁচিশ বছর আগে তাদের কৈশোরের আনন্দ-উচ্ছ্বল দিন গুলোতে। স্যারদের বেতের কথা, স্কুল ফাঁকি দিয়ে দোকানে আড্ডা, রূপালী সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার কথা, উপজেলার খেলার মাঠে, দোকানে বই রেখে ভিডিও গেইম খেলার কথা ইত্যাদি মন খোলা স্মৃতিচারণ করা হয় অনুষ্ঠানে। এতে আমন্ত্রিত উপস্থিত শিক্ষকরা ৯৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তোমরা যে যে পেশায় থাকো, সৎ উপার্জন দিয়ে ছেলে মেয়েদেরকে মানুষের মত মানুষ করে দেশের সম্পদ রুপে তৈরীর করার চেষ্টা করবে। এভাবে ২৬/২৭ বছর পর একসাথে মিলিত হওয়ার আনন্দটাই আলাদা, অন্য রকম এক অনুভূতির ।” পরে সিনিয়র শিক্ষক বাবু মিলন কান্তি মহাজন , সিনিয়র শিক্ষক জনাব মোঃ ইউছুপ ও প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আতাউর রহমান মিয়াকে যথাযথ মর্যাদায় অনুষ্ঠানিক ভাবে উপঢৌকন ও প্রীতি উপহার প্রদানের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ব্যাচের ছাত্রদের রাখা বক্তব্যে তারা বলেন, “শিক্ষকরা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন তাই নিয়েই আমরা জীবনের পথে চলছি। তাদের নীতি-নৈতিকতার শিক্ষাই আজ আমাদের জীবনের পাথেয়। আমাদের জীবন সেই অর্থে এই শিক্ষকদেরই দান। তাদের সম্মানিত করার সামর্থ-সাধ্য আমাদের নেই। তাদের সম্মানিত করে আমরা নিজেরাই সম্মানিত ও গৌরবান্বিত বোধ করছি।”
৯৬ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে আয়োজক কমিটির দিদারুল ইসলাম রুবেল, নেজাম উদ্দীন রাসেল, নজরুল নাজমুল ও জসিম বলেন, “সহপাঠিদের মাধ্যমে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে তাঁরা সংগঠিত হওয়া শুরু করেন। শুরু থেকেই সবার আকাঙ্ক্ষা ছিল একত্রিত হওয়ার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার।এর মাধ্যমের সবাই সবার সুখ-দুঃখের ভাগিদার হচ্ছে। এই প্রচেষ্টার আন্তরিক রূপ হচ্ছে এই পুনর্মিলনী।” ভবিষ্যতেও এই ধরনের প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। লেখা: মো.আলাউদ্দীন
