কনডেম সেলে প্রদীপ-লিয়াকত

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী কক্সবাজার কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন চুপচাপ।

গতকাল সোমবার(৩১ জানুয়ারি) রাতে জেলা ও দায়রা জজ কার্যালয় থেকে মামলার রায়ের কপি ও আদেশনামা জেলা কারাগারে পৌঁছানোর পর তাদের ডিভিশন বাতিল করে কারা পোশাক পরিয়ে কনডেম সেলে স্থানান্তর করা হয়।

প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এত দিন তারা এই বিশেষ সুবিধা ভোগ করছিলেন। এর আগে সন্ধ্যায় আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে করে মামলার আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার রায়ের কপি ও আদেশনামা জেলা কারাগারে পৌঁছানোর পর যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে কারা পোশাক পরিয়ে দেয়া হয় এবং খালাসপ্রাপ্ত ৭ আসামিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা মুক্তি পেয়েই নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন বলে জানা গেছে।

দেশের বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের দেড় বছরের মাথায় গতকাল সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার ৬ আসামীকে যাবজ্জীবন সাজা এবং বাকী ৭ আসামীকে খালাস দেয় আদালত।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো কন্সটেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং পুলিশের করা মামলার স্বাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

রায়ে সাজাপ্রাপ্ত ৮ জন আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডও প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলো কন্সটেবল সাফানুর করিম, আব্দুল্লাব্দুহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কন্সটেবল মো. রাজীব, কামাল হোসেন আজাদ ও মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) মো. নেছার আলম জানান, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে অন্য আসামিদের কাছ থেকে আলাদা করা হয়। কারাগারের একটি কক্ষকে কনডেম সেল ঘোষণা করে সেখানে তাদের রাখা হয়েছে। কক্সবাজার কারাগারে আদাদা কোনো কনডেম সেল না থাকায় এই কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি এলে কিছু কক্ষকে কনডেম সেল ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয়। জেল কোড অনুযায়ী তাদের প্রতিদিন খাবার ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, কনডেম সেল হিসেবে যে কক্ষে প্রদীপ, লিয়াকতকে রাখা হয়েছে সেখানে দু’জনই সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। সময়মতো খাবার খাচ্ছেন। তবে সেখানে চুপচাপ রয়েছেন তারা। তাদের ফাঁসির দন্ডাদেশ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিত বা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কনডেম সেলেই তারা থাকবেন। তারা এখন সাধারণ কয়েদি।