‘আন্তর্জাতিক-আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ’

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ‘সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২১-২০২২’ এর গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’’- এ মূলমন্ত্রকে পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে মেনে চলছি। ’

যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করব না। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে আমরা চুপ করে থাকব না, সেটা নিশ্চয়ই আমরা প্রতিরোধ-প্রতিবাদ করব। সেভাবেই আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলছি। ’

সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও শুধু মানবতার ডাকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের নানাবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা বিপন্ন মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছি। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া, সেটা আমরা করেছি। ’

রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা করে যাচ্ছি, যাতে তারা তাদের স্বদেশে ফিরতে পারে। কাজেই বাংলাদেশ সারাবিশ্বে আমাদের এ নীতিমালার কারণে একটা সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি। ’

সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে সরকারের ‘‘জিরো টলারেন্স’’ নীতির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশে অনেক নেতিবাচক কথা ছিল। তবে এখনো কিছু কিছু লোক আছে বাংলাদেশ সম্পর্কে বদনাম করতেই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ফলে এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা এবং দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমনে আমরা যে দক্ষতা দেখিয়েছি, তার ফলে আজ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল হয়েছে। ’

বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঠিক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পর যে সম্মান আমরা আন্তর্জাতিকভাবে পেয়েছিলাম, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর যে সম্মান আমরা হারিয়েছিলাম, আজ আবার সেই সম্মান আমরা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। এ মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। ’

সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর মোট ১২৮টি কোর্স পরিচালনা করেছে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ। পাঁচ হাজার ৬৮৬ জন পেয়েছেন ডিগ্রি। বাংলাদশে ছাড়াও ৪৩টি দেশের এক হাজার ২৫৫ জন কর্মকর্তা এ কলেজ থেকে ডিগ্রি নিয়ে নিজ নিজ দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

এবারও ১৮টি দেশের ৪৭ জন বিদেশি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৫১ জন এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।