দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দরকষাকষি

নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দরকষাকষি করছেন ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এর অংশ হিসেবে যদি দুর্নীতির বিচার থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়, তাহলে বহু বছরের জন্য ইসরাইলের রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বিদায় নিতে হতে পারে তাকে। বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

বেনিয়ামিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা ১২ বছর ইসরাইল শাসন করেন। কিন্তু গত জুনে তিনি ক্ষমতা হারান। বর্তমানে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা। ঘুষ, আস্থা ভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে ২০১৯ সালে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলছে একসঙ্গে। তবে কোনো অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন নেতানিয়াহু।

বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করা নিয়ে যে দর কষাকষি চলছে, তার ওপর ভিত্তি করে এ সপ্তাহের শুরুর দিকে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে সরকারের সঙ্গে।
এ আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এমন একজন ব্যক্তি রোববার এ তথ্য দিয়েছেন বার্তা সংস্থা এপিকে। তিনি বলেছেন, যেকোন একটি চুক্তি হলে তা নেতানিয়াহুকে ব্রিবতকর অবস্থা থেকে মুক্তি দেবে। জাতিকে আচ্ছন্ন করে আছে এমন একটি বিচার প্রক্রিয়া থেকে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

এ বিষয়ে জানেন এমন একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, চুক্তিতে নেতানিয়াহুকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এই শর্তটিতে আলোচনা আটকে আছে। সূত্র বলেছেন, এটর্নি জেনারেল আভিচাই ম্যান্ডেলব্লিটের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন ৭২ বছর বয়সী নেতানিয়াহু। এতে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে অভিযোগ প্রত্যাহার দাবি করতে পারেন। শাস্তি হিসেবে জেলকে শিথিল করে সমাজ সেবা করার কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু নেতানিয়াহুকে নৈতিক স্খলনের একটি ধারায় অভিযুক্ত করার বিষয় প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা আটকে আছে। ইসরাইলের আইন অনুযায়ী তাকে অনেক বছরের জন্য রাজনীতি ছাড়তে হতে পারে। এ নিয়ে এটর্নি জেনারেলের অফিস কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নেতানিয়াহুর সঙ্গে এমন চুক্তির খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমালোচকরা। তারা বলেছেন, এটা করা হলে তাতে আইনের শাসনকে খর্ব করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিটজান হোরোউইটজ টুইটে বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত কারণে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনআস্থা ধ্বংসে কাজ করেছেন তার সঙ্গে কোনো বৈধ চুক্তি হতে পারে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ইসরাইলের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করার পরে অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি নিজে। তিনি বলেছেন, ইসরাইলের বিচার ব্যবস্থা পক্ষপাতী। তার বিরুদ্ধে উইচ-হান্ট বা অশুভ তৎপরতা দেখানো হয়েছে। তাই নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি ওই মন্তব্য করেন।

খবর প্রচার হওয়ার ফলে শনিবার রাতে এটর্নি জেনারেলের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ করেছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এমন কোনো চুক্তি হলে আদালতে তা চ্যালেঞ্জ জানানো হবে তা অনেকটা স্পষ্ট। এ বিষয়ে নেতানিয়াহুর একজন আইনজীবী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।