প্রথম টেস্টে দাপট দেখিয়ে জয়ে ইহিতাস গড়েছে বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে প্রথমবার হারিয়ে ইহিতাস গড়েছে বাংলাদেশ। ইবাদত হোসেনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে দাপট দেখিয়ে ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে মুমিনুলবাহিনী।

কিউইদের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ৩২৮ ও ১৬৯
বাংলাদেশ: ৪৫৮ ও ৪২/২ (৪০ রানের লক্ষ্য)

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে উপমহাদেশের দেশগুলো খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। পাকিস্তান এখানে সবশেষ জিতেছে ২০১১ সালে, ভারত ২০০৯ সালে, শ্রীলঙ্কা, ২০০৬ সালে। তবে ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্টে না হারা কিউইদের এবার মাটিতে নামাল বাংলাদেশ।

 

দাপুটে এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও পেল প্রথম পয়েন্টের দেখা।

এর আগে ৫ উইকেটে ১৪৭ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল নিউজিল্যান্ড। মাউন্ট মুঙ্গানুইয়ের বে ওভালে বুধবার (০৫ জানুয়ারি) পঞ্চম ও শেষ দিনে সকালের সেশনে ১০.৪ ওভারের মধ্যে মাত্র ২২ রান তুলতেই বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে অলআউট হয় টম লাথামের দল। এতে জয়ের জন্য মাত্র ৪০ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।

সহজ এই লক্ষে খেলতে নেমে ১৬.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে দাপুটে উদযাপনে মাতে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ পর বাংলাদেশ এই জয় পেল।

চতুর্থ দিন হুমকি হয়ে দাঁড়ানো কিউই অভিজ্ঞ ব্যাটার রস টেইলরকে এদিন দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড করে ফেরান ইবাদত হোসেন। এই উইকেট পাওয়ার সঙ্গে নিজের ১১ টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট দখল করলেন এই পেসার। ১০৪ বলে ২টি চারে ৪০ রান করা টেইলর ছিলেন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার। এরপর জ্বলে ওঠেন তাসকিন আহমেদও। তিনি রাচিন রবীন্দ্রকে (১৬) লিটন দাসের ক্যাচের পরিণত করার পর টিম সাউদিকে বোল্ড করেন।

 

কাইল জেমিসনকে শূন্য রানে শরিফুল ইসলামের ক্যাচ বানান ডানহাতি ইবাদত। আর স্বাগতিকদের শেষ উইকেট হিসেবে ট্রেন্ট বোল্টকে ফেরান স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।

২১ ওভারে ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার ইবাদত। বাংলাদেশের কোনো পেসার প্রায় ৯ বছর ও ৪৭ টেস্ট পর টেস্টে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন। দেশের বাইরে টাইগার কোনো পেসারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে পেসারদের দ্বিতীয় সেরা।

এছাড়া তাসকিন ১৪ ওভারে ৩৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট ও মিরাজ একটি উইকেট পান।

৪০ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে অবশ্য বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় দ্বিতীয় ওভার ও ৩ রানে ওপেনার সাদমানকে হারায়। সাউদির বলে টম ব্লান্ডেলের কাছে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর ব্যক্তিগত ১৭ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত জেমিসনের শিকার হন। তবে আর কোনো বিপদ হতে দেননি দুই অভিজ্ঞ মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক মুমিনুল ৪৪ বলে ৩টি চারে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। আর ৭ বলে ৫ করা মুশফিক জয়ী রানটি তুলে বাংলাদেশকে আনন্দে ভাসান।

 

এর আগে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশ জবাবে ৪৫৮ রান করেছিল। যেখানে প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড পায়।

দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট পাওয়া ইবাদত হোসেনই ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।

আগামী ৯ জানুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট মাঠে গড়াবে।