মুমিনুলের পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত লিটনও, ৫০ ছাড়িয়েছে লিড

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে ১৫৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন মুমিনুল হক ও লিটন দাস। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যক্তিগত ৮৮ রানে বোল্টের বলে আউট হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল হক। মুমিনুলের পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন লিটন দাসও। ব্যক্তিগত ৮৬ ও দলীয় ৩৭০ রানে বোল্টের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন লিটন।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৭৯/৬। তাতে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ৫১ রানের। ইয়াসির রাব্বি ৫ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ রানে ক্রিজে ছিলেন।

১৭৫/২ নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা বাংলাদেশ শুরুতেই হারায় মাহমুদুল হাসান জয়কে। ব্যক্তিগত ৭৮ রানে নিল ওয়াগনারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন জয়।

ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিকও। ১২ রান করে পরিণত হন বোল্টের শিকারে।

বোলারদের আলো ছড়ানো পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের ব্যাটাররাও দেখাচ্ছেন দাপট। জোড়া ফিফটিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা নিজেদের করে নেন জয়-শান্তরা। বে ওভালে প্রথম ইনিংসে ২ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। তখনও ১৫৩ রানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।

১৮.১তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন সাদমান ইসলাম। ক্রিজ ছাড়ার আগে টাইগার ওপেনারের সংগ্রহ ৫৫ বলে ২২ রান। এরপর মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে রান বাড়াতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৭০ রানে ১ উইকেট নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান জয় ও শান্ত। শান্ত রানের চাকা সচল রাখেন আর জয় সতর্ক ব্যাটিংয়ে একপ্রান্ত আগলে ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন।

১৯তম ওভারে ব্যাট করতে নামা শান্ত কিউই বাঁহাতি স্পিনার রাচিন রবীন্দ্রকে ছক্কা হাঁকিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেন। ৯০ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন শান্ত। জয়-শান্তর জুটি ২২৭ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে। এই দুই তরুণ ব্যাটারের কল্যাণে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দ্বিতীয় উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশ। এর আগে দ্বিতীয় উইকেটে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হকের ৬৪ রান।

অর্ধশতক হাঁকানোর পরই রান তোলার গতি বৃদ্ধি করেন শান্ত। কিন্তু ব্যক্তিগত ৬৪ রানে কিউই পেসার নেইল ওয়াগনারের বলে ক্যাচ আউট হয়ে যান তিনি। ভেঙে যায় শান্ত ও জয়ের ১০৪ রানের জুটি। শান্তর ১০৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ১টি ছক্কা। পরে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম টেস্ট ফিফটির স্বাদ পাওয়া এই ব্যাটার দ্বিতীয় দিন শেষে ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন। জয়ের ২১১ বলের হার না মানা ইনিংসে ছিল ৭টি চারের মার।

টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক ২৭ বলে ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেন। ১৬ ওভার বল করে ২৭ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট নেন নেইল ওয়াগনার। এর আগে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে কিউই ব্যাটাররা। শনিবার ম্যাচের প্রথম দিনে ৮৭.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনে তাদের বাকি ৫ উইকেট তুলে নিতে বাংলাদেশের লেগেছে ২০.৪ ওভার। আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে আর ৭০ রান যোগ করে ৩২৮ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার পেসার শরীফুল ইসলাম। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে থার্ড স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন রবীন্দ্র। সাজঘরে ফেরার আগে নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যাটারের সংগ্রহ ছিল ১৮ বলে ৪ রান। সুবিধা করতে পারেননি কাইল জেমিসনও। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে ২০ বলে মাত্র ৬ রান করেন তিনি। এরপর নিজের ৩১তম ওভার করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নেন মিরাজ। ৬ রানে টিম সাউদিকে মিড উইকেটে মুমিনুল হকের ক্যাচ বানানোর পর নেইল ওয়েগনারকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান মিরাজ।

প্রথম দিন ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ার ডেভন কনওয়েকেও সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অকেশনাল বোলার মুমিনুল। কিউইদের প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার নিকোলসকেও ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক। একপ্রান্ত আগলে রাখা হ্যানরি নিকোলস ব্যক্তিগত ৭৫ রানে মুমিনুল হকের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন সাদমানের হাতে। এর ফলে ৩২৮ রানে থামে কিউইদের ইনিংস। বল হাতে ৩টি করে উইকেট নেন শরীফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। মুমিনুল হকের শিকার ২ উইকেট। এক উইকেট নেন ইবাদত হোসেন। অপরটি রানআউট।