আফ্রিকার সাত দেশ থেকে ফিরলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন

    করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে আফ্রিকা মহাদেশের ৭ দেশ থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।

    বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে এক জরুরি নির্দেশনায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

    নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বতসোয়ানা, লেসোথো, ইসোয়াতিনি, ঘানা, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে থেকে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন নিজ খরচে কোয়ারেন্টিন করতে হবে।

    এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনার আগেই হোটেল বুকিং করতে হবে। যেকোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে আসতে হলে যাত্রার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।

    এছাড়া আগত যাত্রীদের হোটেলে থাকা অবস্থায় ৭ম ও ১৪তম দিনে করোনাভাইরাস শনাক্তের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানো হবে। কোনোটির ফলাফল পজিটিভ এলে তাকে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হবে।

    গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়। পরে বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশে এ ধরনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এখনো কারো শরীরে ওমিক্রন শনাক্তের খবর পাওয়া যায়নি।

     

    করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি ভারতে শনাক্ত অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    দু’দিন আগেই ওমিক্রনের সংক্রমণ তালিকায় ছিল ১২টি দেশের নাম। শুক্রবার প্রকাশিত নতুন তালিকায় দেশের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৩০টিতে দাঁড়িয়েছে। এসব দেশে মোট ৩৭৫ জন এই ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন।

    প্রতিবেশী ভারতে ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের অধিকাংশ দেশে ঢুকে পড়েছে করোনার বিপজ্জনক নতুন ভ্যারিয়েন্টটি।

    ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি) জানিয়েছে, যে গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন, শিগগিরই ডেল্টাকে সরিয়ে এটিই বিশ্বে ‘ডমিন্যান্ট’ বা মূল সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠবে।

    দক্ষিণ আফ্রিকা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট করেছিল ২৪ নভেম্বর। কিন্তু সাম্প্রতিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এর বহু আগেই বিভিন্ন দেশে ছড়াতে শুরু করেছিল ভ্যারিয়েন্টটি।

    ইসিডিসি দাবি করেছে, আফ্রিকা মহাদেশের বতসোয়ানায় প্রথম ওমিক্রন চিহ্নিত হয়েছিল ১১ নভেম্বর। দক্ষিণ আফ্রিকা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি, তাদের দেশে কবে প্রথম ধরা পড়ে ভ্যারিয়েন্টটি। নভেম্বরের শুরু থেকে তারা রোগীদের মধ্যে ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ্য করে। করোনা পরীক্ষাতেও ভাইরাসের এস-জিনের অনুপস্থিতি চোখে পড়ে সে দেশের বিজ্ঞানীদের। এর পরে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট।

    হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়া ৩০ দেশের তালিকা নিচে

    ভারত – শনাক্ত ২
    দক্ষিণ আফ্রিকা – শনাক্ত ১৮৩
    বতসোয়ানা – শনাক্ত ১৯
    নেদারল্যান্ডস – শনাক্ত ১৬
    হংকং- শনাক্ত ৭
    ইসরায়েল- শনাক্ত ২
    বেলজিয়াম -শনাক্ত ২
    যুক্তরাজ্য – শনাক্ত ৩২
    জার্মানি – শনাক্ত ১০
    অস্ট্রেলিয়া – শনাক্ত ৪
    ইতালি- শনাক্ত ৮
    চেকিয়া – শনাক্ত ১
    ডেনমার্ক – শনাক্ত ৬
    অস্ট্রিয়া – শনাক্ত ৪
    কানাডা – শনাক্ত ৭
    সুইডেন – শনাক্ত ৪
    সুইজারল্যান্ড -শনাক্ত ৩
    স্পেন – শনাক্ত ২
    পর্তুগাল – শনাক্ত ১৩
    জাপান – শনাক্ত ২
    রেউনিওঁ (ফ্রান্স)- শনাক্ত ১
    ঘানা – শনাক্ত ৩৩
    দক্ষিণ কোরিয়া- শনাক্ত ৩
    নাইজেরিয়া – শনাক্ত ৩
    ব্রাজিল – শনাক্ত ২
    নরওয়ে – শনাক্ত ২
    সৌদি আরব- শনাক্ত ১
    আয়ারল্যান্ড – শনাক্ত ১
    সংযুক্ত আরব আমিরাত- শনাক্ত ১
    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – শনাক্ত ১