হাবিলদার হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশ গাফিলতি, উদাসীনতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে

চান্দগাঁও থানার সিঅ্যান্ডবি বিসিক এলাকায় আটগাছ তলার রোড ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনের হাবিলদার মো. ইদ্রিস মিয়া হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশের ‘গাফিলতি’ ছিল বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, পুলিশের মামলায় পুলিশ গাফিলতি ও সহকর্মীর হত্যা মামলা হিসেবে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

হাবিলদার মো. ইদ্রিস মিয়া হত্যা মামলার বিষয়টা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের নজরে আনবেন বলে অভিমত প্রকাশ করেন আদালত। সোমবার (১৫ নভেম্বর ) দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত রায় ঘোষণার এ পর্যবেক্ষণ জানান।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বিষয়ে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকট মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনের হাবিলদার মো.ইদ্রিস মিয়া তিন দিনের ছুটিতে ২০০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে আসেন। চট্টগ্রামে আসার সঙ্গে সঙ্গে ছিনতাইকারী চক্র মো. ইদ্রিস মিয়াকে নিয়ে যায়। প্রচণ্ড মারধর ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পুলিশের গাফিলিতির কারণে মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়াতে পুনরায় আদালতে চলে আসে।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ সহকর্মীর মামলায় উদাসীনতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। শহীদ রেজা নামে একজন করাগারে থাকা অবস্থায় মামলায় আসামি করা হয়েছিল। একজন সহকর্মীর মামলায় পুলিশ যে আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে, আসলে আমাদের স্তম্ভিত করে দিয়েছে। আদালত পর্যবেক্ষণে তাদের তিরষ্কার করেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ রায়ে পুলিশ মামলার প্রতি উদাসীনতার বিষয়ে একটি আদালতের অভিমত আসবে। শুধু পুলিশের গাফিলতির কারণে সাত আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।

গত ২০০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর তিন দিনের ছুটিতে নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনের হাবিলদার মো.ইদ্রিস মিয়া চট্টগ্রামে আসেন। সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে তিনি ছিনতাইকারী চক্রের কবলে পড়েন। ২৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মো.ইদ্রিস মিয়ার মরদেহ চান্দগাঁও থানাধীন সিঅ্যান্ডবি বিসিক এলাকার আটগাছ তলার রোড থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কে এম পেয়ার আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মো.জাকের হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ মামলায় আদালতে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বলেন, পুলিশ হত্যা মামলায় জাকের হোসেন নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হলেও অন্য সাতজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে চারজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি জাকের হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।