মানবিক খাদ্য সহায়তায় পায়নি কুতুবদিয়ায় ৭২৫৯ জেলে

লিটন কুতুবী, কুতুবদিয়া::

অক্টোবর মাসে ২২ দিন বঙ্গোপসাগর ও বিভিন্ন নদীতে ইলিশ প্রজননে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। সরকারিভাবে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ঘোষনা মোতাবেক গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর মোট ২২ দিন জেলেরা সাগরে ও নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত ছিল। প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে বেকার জেলেদের জন্য সরকার মানবিক খাদ্য সহায়তা হিসেবে (ভিজিএফ) চাল বরাদ্দ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় কুতুবদিয়া উপজেলায় ছয় ইউনিয়নে ৩৭০০ জন জেলেকে ২০কেজি করে ৭৪ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেন বলে কুতুবদিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আনোয়ারুল আমিন নিশ্চিত করেন। গত সপ্তাহে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এর আগে গত ২০মে হতে ২৩ জুলাই/২১ মোট ৬৫ দিন জেলেদেরকে সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ঐ সময়ে কুতুবদিয়া উপজেলায় নিবন্ধিত ও কার্ডধারী ১০৯৫৯ জন জেলেদের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে দুই দফায় জনপ্রতি ৮৪ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।

গেল ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সরকারিভাবে চাল বরাদ্দ কম থাকায় কুতুবদিয়া উপজেলায় গত ৬৫ দিনের প্রাপ্ত প্রকৃত ১০৯৫৯ জেলের মধ্যে ৩৭০০ জেলে বরাদ্দকৃত চাল পেলেও ৭২৫৯ জন জেলে চাল পায়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর নিকট বিষয়টি অবহিত করেন বলে মৎস্য কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন।
এ দিকে সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ৬৫ দিনে (২০ মে হতে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন) উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে ২৮৭৫ জন জেলে মানবিক খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। কিন্তু ৪অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর ২২ দিন সাগরে ও নদীতে ইলিশ প্রজনন নিষেধাজ্ঞা ৯৫০ জন জেলে সরকারি বরাদ্দকৃত জনপ্রতি ২০ কেজি করে চাল পেয়েছে। আরো ১৯২৫ জন জেলে চাল পায়নি।

একই রুপ দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে প্রকৃত জেলের সংখ্যা ১৫১১ জন। এবারে চাল পেয়েছে ৫০০ জন জেলে, চাল পায়নি ১০১১ জন জেলে।
লেমশীখালী ইউনিয়নে প্রকৃত জেলে ৯৭৫ জন, এবারে চাল পেয়েছে ৩৫০ জন জেলে, বাকি আরো ৬২৫ জেলে চাল পায়নি।
কৈয়ারবিল ইউনিয়নে প্রকৃত জেলে ৭৫২ জন, এবারে চাল পেয়েছে ৩০০ জন জেলে। বাকি আরো ৪৫২ জন জেলে চাল পায়নি।
বড়ঘোপ ইউনিয়নে প্রকৃত ২৪১২ জন জেলে। এবারের চাল পেয়েছে ৮০০ জন জেলে। বাকি আরো ১৬১২ জন জেলে চাল পায়নি।
আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে প্রকৃত জেলে ২৪৩৩ জন। এবারে চাল পেয়েছে ৮০০ জন জেলে। বাকি আরো ১৬৩৩ জন জেলে চাল পায়নি।

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়া উপজেলায় গত ২০মে হতে ২৩ জুলাই/২১ মোট ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধের সময় কার্ড ও নিবন্ধনধারী ১০৯৫৯ জন জেলে ৮৪ কেজি করে চাল পেয়েছে। দ্বিতীয় দফায় প্রধান প্রজনন মৌসুম ইলিশ আহরণ গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর মোট ২২ দিন নদী, সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সময়ে কুতুবদিয়া উপকূলের ৩৭০০ জন জেলে প্রতিজন ২০ কেজি করে চাল পেয়েছে। বাকি আরো ৭২৫৯ জন জেলে চাল পাযনি।

কুতুবদিয়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি কৈয়ারবিল ইউপির চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর জানান, কুতুবদিয়া মৎস্য অফিসের তালিকাভূক্ত কার্ড ও নিবন্ধনধারী ১০৯৫৯ জেলেদের মধ্যে ৭২৫৯ জেলে মানবিক খাদ্য সহায়তা চাল পায়নি, বর্তমানে ঐ সব জেলে পরিবার হতাশা ভোগছেন।