কাপ্তাইয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত-১ আহত-৩

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি কাপ্তাইয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কাপ্তাই ইউপি সদস্য সজিবুর রহমান সজিব (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে আরো ৩ জন। এরমধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রাত প্রায় ১১টায় নতুন বাজারের মা বেকারির সামনে এঘটনা ঘটে। রাতেই সুইডিশ কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহে মোঃ আরিফুল ইসলাম বাবু (২৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদলের সমর্থক বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত সজিবুর রহমান সজিব কাপ্তাই ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য। তিনি টানা দু’বার ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। আহতেরা হলেন- মোঃ আলাউদ্দিন (৪৫), মোঃ সালাউদ্দিন (৫৫) এবং আব্দুল জলিল। দু’গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই থানার ওসি নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, স্থানীয় মোশারফের মালিকানাধীন মা বেকারিতে ইউপি নির্বাচন নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে বিরত থাকা বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল ও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ (বর্তমান চেয়ারম্যান) সমর্থকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে সজিবসহ আরো ৩ জন গুরুতর আহত হয়। ওসি নাছির উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউপি সদস্য সজিবকে মৃত ঘোষণা করে। কাপ্তাই স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ওমর ফারুক রনি জানান, আহত ১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি ২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। কাপ্তাই থানা ওসি বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এদিকে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নতুন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেছে নিহত সজিবুর রহমান সজিবের কর্মী সমর্থকরা। নিরোপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন তারা। কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সজিব মেম্বারের সঙ্গে কারো বাকবিতণ্ডা হয়নি। তিনি মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারের সাথে আলাপ করছিলেন। ওই মুহূর্তে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে সজিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এঅভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল বলেন, সজিবসহ ২০ জনের একটি গ্রুপ রাতে মা বেকারিতে এসে আমার সমর্থিত কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। পরে একসময় তাদের দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। এনিয়ে সংঘর্ষ বাধে। মূলত সজিবরা গায়ে পড়েই তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে। উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। ওই ঘটনার পর ইউনিয়নের নির্বাচন পিছিয়ে ২৮ নভেম্বর নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। কাপ্তাইয়ের বাকি তিন ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।