ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা

বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে ৭ দিনব্যাপী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২১ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা। পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী। এনিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থাকে আসবেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক। যাদের অধিকাংশের চট্টগ্রামে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই এই পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন চট্টগ্রাম নগরের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন। তার পরিচালিত সংস্থা আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মুসাফির খানায় বাইরে থাকার ব্যবস্থা করতে না পারা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে থাকা -খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ভর্তিচ্ছুকদের ক্যাম্পাসে আসা যাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে ফ্রি পরিবহন সুবিধা।
জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্যাম্পাসের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরেও থাকতে চান। তবে ভালো আবাসন না পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক দুরবস্থার কারণে তাদের অনেকে টাকা দিয়ে হোটেলে থাকতে পারেন না।

এই শিক্ষার্থীর এখন চাইলে শামসুল হক ফাউন্ডেশনের পরিচালিত মুসাফিরখানায় ফ্রিতে থাকতে ও খেতে পারবেন।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক বছর আগে নিজের পিতা আলাহাজ্ব শামসুল হকের নামে গঠিত এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘মুসাফির খানা’ নামে একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করেছিল আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন। এতে চিকিৎসা, চাকরির ইন্টারভিউতে আসা মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসা ছাত্রছাত্রীদের ফ্রিতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি মেহমানখানা নামে আরেকটা প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ২ শত মানুষকে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।

জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানাধীন গোলাম আলী নাজির পাড়ায় আছে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্স। নগরীর বহদ্দারহাট খাজা রোডের চৌধুরীর স্কুলের পাশ দিয়ে কিংবা বাস টার্মিনালের পরে পুরাতন চান্দগাঁও থানা পাঠানিয়া গোদা হয়ে সেখানে আসা যায়। কমপ্লেক্সের ৪র্থ তলায় এই মুসাফির খানা অবস্থিত। সেখানে ছেলে মেয়েদের জন্য পৃথক থাকার ব্যবস্থা আছে। আছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর পাশে থাকা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পরিচালিত মেহমানখানা থেকে তাদের জন্য ফ্রিতে দু’বেলা খাবারেরও ব্যবস্থাও করা হয়।
এই বিষয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা আসবেন। এখানে এসে তাদের অনেকে থাকার জায়গা পান না। তাঁরা চাইলে আমাদের পরিচালিত মুসাফিরখানায় ফ্রিতে থাকতে ও খেতে পারবেন। আর পরিবহন জটিলতা কাটাতে আমরা বাসেরও ব্যবস্থা করেছি। শহরের শপিং কমপ্লেক্সের সামনে আমাদের বাস থাকবে। সেখান থেকে ভর্তি পরীক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারবেন। আর পরীক্ষা শেষে একই গাড়িতে করে আবার শহরে চলে আসতে পারবেন।

 

এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের এখানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে। প্রয়োজনে আমাদের পরিচালিত মাদ্রাসায়ও তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এখন যে কেউ চাইলে আমাদের অফিসিয়াল নাম্বার ০১৮৪১০৪০৫৪০ নাম্বারে ফোন দিয়ে বিনা সংকোচে চলে আসতে পারবেন। আমরা তাদের জন্য সাধ্যমতো মেহমানদারির চেষ্টা করবো।’
উল্লেখ্য, আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম নগরীতে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছে। কর্জে হাসানা প্রজেক্ট, বেকার লোকদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকা-ে এটি পেয়েছে সাধারণ মানুষের প্রশংসা। লকডাউনে সময় অসহায় মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ পুলিশের সাথে জেদ করে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলা পাঠাও চালককে মোটরসাইকেল দেয়া ও সাতক্ষীরার প্রতাপনগরে হাওলাদার বাড়ি ভাঙ্গন পয়েন্টে দেশের প্রথম ভাসমান মসজিদ নির্মাণ করে সুনাম কুড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।