বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত থাকা ও চট্টগ্রামে সরকারী দলের নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ বিষয়ে অভিহিত করে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে মহানগর বিএনপি।
আজ ১৮ নভেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মুনির হোসাইন খানের মাধ্যমে ইসিকেে এ স্বারকলিপি দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, হাইকোর্টের জামিন থাকা ব্যক্তি ও হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসার সময় জেল গেইট থেকে নেতাকর্মীদের পুনরায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এ ধরনের আচরণে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
নির্বাচন কমিশন দেশে ও বিদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার পুন: পুন: প্রতিশ্রু তির পর দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিসহ জাতীয়
ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ গ্রহণের ঘোষণা দেয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সেই লক্ষে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দলীয় নেতাকর্মী ও দেশের মানুষকে উজ্জ্বীবিত করার কাজ করছে।
এই অবস্থায় পুলিশের এই গ্রেফতারের ঘটনা নির্বাচন কমিশনের কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।
স্বারকলিপিতে আরো বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা জমির উদ্দিন মানিক ও জাহাঙ্গির আলম বাবলু হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকার পরও গত ১৪ নভেম্বর চান্দগাঁও থানার পুলিশ তাদের আটক করে অন্য দুইটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রদল নেতা সাইফুদ্দিন কামরান ও মো. নাজিম উদ্দিন সদরঘাট থানার মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় গত ১৬ নভেম্বর কোতোয়ালী থানা পুলিশ জেল গেইট থেকে পুনরায় আটক করে অন্য মামলায় জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।
আগামী ২৮ নভেম্বর কমার্স কলেজে তাদের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ গ্রেফতারে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিয়তার পথে। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ এজাহারভূক্ত আসামী না হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতারকৃত নগর যুবদল নেতা ওমর ফারুক হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় গত ১৬ নভেম্বর জেল গেইট থেকে ঐ থানার পুলিশ পুনরায় গ্রেফতার করে।
ডবলমুরিং থানার একটি মামলায় গ্রেফতারকৃত নগর যুবদল নেতা আবদুল নূর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় গত ১৫ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে হালিশহর থানার আরেকটি মামলায় পুনরায় কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ীতে তল্লাশীর নামে হয়রাণী করছে।
নগর বিএনপি সদস্য জাকির হোসেনের শোলকবহরের আরাকান সোসাইটির বাসায় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গত ১৬ নভেম্বর সকাল ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত তল্লাসী চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করে।
এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫টি থানায় গত ২মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪০টি গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়। ইতোমধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে যাওয়া ডা. শাহাদাত হোসেন, মো. সামশুল হক, কামরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, জিয়াউর রহমান জিয়া, জমির উদ্দিন নাহিদ ও মো. আজমকে ঢাকার ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে।
তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের এ আচরণ একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ার আংশকা করছি আমরা। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিলে নির্বাচনী আচরবিধি ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্নস্থানে সভাসমাবেশ করে চলেছে।
অপর দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের কারণে বসতবাড়িতে অবস্থান করতে পারছে না।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপত্র নেয়া প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সহ-সভাপতি ইকবাল চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার, শহিদুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। কারাগারে আটক থাকার কারণে তারা নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারছেন না।