রোয়াংছড়ি-ব্যাঙছড়ি সড়কের কাজ আর হবে কি

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় ২০১০ সালের শেষ দিকে শুরু হয় রোয়াংছড়ি-ব্যাঙছড়ি সড়কের নির্মাণকাজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন এ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও তত্কালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) বীর বাহাদুর উশৈসিং। এরপর প্রায় নয় বছর পেরিয়ে গেলেও আট কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণকাজের বাস্তবায়ন আটকে আছে।

এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় রোয়াংছড়ি-ব্যাঙছড়ি সড়কের কাজ শুরু করা হয়। এরপর সড়কের চক্ষুলালপাড়া পর্যন্ত এক কিলোমিটারে ইট বিছানোর পরই নির্মাণকাজ থেমে যায়।

স্থানীয়রা জানান, চলাচলের জন্য এ সড়কের ওপর নির্ভরশীল ১৭টি পাড়ার অন্তত ৭০০টি পরিবার। পাড়াগুলোয় মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বম ও খিয়াং জনগোষ্ঠীর মানুষের বাস। প্রতি সোম ও শুক্রবার উপজেলা সদরে হাটের দিন এ পথেই তাদেরকে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে যেতে হয়। কোনো যানবাহন চলাচল না করায় তাদেরকে আলু, বাদাম, কলা, পাহাড়ি তুলা ও তিল নিয়ে হাঁটতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এগুলো বিক্রির পর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে একইভাবে আবার ফিরতে হয়।

এ পথে কথা হয় লুংলাইপাড়ার কারবারি (পাড়াপ্রধান) মুনদির বম, মডেলপাড়ার লালএংভার বম, ব্যাঙছড়িপাড়ার উসাঞোয়াইসহ আরো কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, বহু আগে রোয়াংছড়ি-ব্যাঙছড়ি পর্যন্ত কাঁচা সড়ক তৈরি করা হয়েছিল। এরপর আট বছর আগে চক্ষুলালপাড়া পর্যন্ত সড়কে ইট বিছানো হয়। কিন্তু এরপর আর কাজ এগোয়নি। যানবাহন না চলায় পণ্য পরিবহনে কষ্ট তো হয়ই, কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে একমাত্র ভরসা ‘মানব অ্যাম্বুলেন্স’।

এ বিষয়ে কথা হয় বান্দরবান এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী ও রোয়াংছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী পদে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এনএসএম জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শুরু হলেও ওই সময় সড়কটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের অনুমোদন বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) দেয়নি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ। তাই নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগামী অর্থবছর থেকে সড়কটির নির্মাণকাজ আবারো শুরু করা হবে।