মালয়েশিয়ায় হঠাৎ ভিসা নবায়ন স্থগিত, বিপাকে লাখ লাখ শ্রমিক

তাজউদ্দিন জেমি, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি:: মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসী কর্মীদের বার্ষিক ভিসা নবায়ন বা লেভি প্রদান কার্য়ক্রম আগামী ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। এতে দেশটিতে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত কয়েক লাখ বিদেশী কর্মী অবৈধ হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন অভিবাসন খাতের বিশ্লষকরা। শনিবার দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিদেশী কর্মীদের ভিসার নবায়নে লেভি বা নতুন শুল্ক পরিশোধ ব্যবস্থাটি আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বিদেশী কর্মীদের কর্মসংস্থান শিল্পের বিভিন্ন খাতে সঠিক চাহিদার ভিত্তিতে পরবর্তীকালে তাদের নিয়োগ করা হবে। মানবসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন, গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত লেভি (শুল্ক) সিস্টেমটি স্থগিত করা হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে চলা করোনা মহামারীর কারণে দেশটিতে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাবের ফলে এটাকে প্রতিরোধ করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া এই মাল্টি-টায়ার সিস্টেমের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বিদেশী কর্মীদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় জনশক্তি ব্যবহারের পথ সুগম করতে এ ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও মন্রী জানান। কারণ করোনার ছোবলে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়ে দেশটির অসংখ্য নাগরিক তাদের কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে গেছেন। তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। এরপর চাহিদার ভিত্তিতে বিদেশীদের পূনরায় নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের বিদেশী কর্মী নিয়োগের কৌঠা পদ্ধতি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। বিভিন্ন শ্রমশক্তির উৎস দেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে যে সমস্ত কর্মীরা রি-হায়ারিং এর মাধ্যমে বৈধ হয়েছেন তারা অভিযোগ করছেন পাঁচ বছরে পাঁচবার লেভি (শুল্ক) পরিশোধ করে ভিসা নবায়ন করা হলেও এখন দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ষষ্ঠবারের মতো লেভি জমা নিয়ে ভিসা নবায়ন না করে তাদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিচ্ছে। অথচ এই প্রক্রিয়ায় একজন সুস্থ ও ফিট কর্মী ১০ বার অথবা ১০ বছর পর্যন্ত প্রতিবছর লেভি পরিশোধ করে কাজ করার নিয়ম ছিল। ২০১৬ সালে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশী প্রবাসী এই রি-হায়ারিং প্রক্রিয়ায় বৈধ হয়েছিলেন। তবে এই স্থগিতাদেশ কী ধরনের রি- হায়ারিং প্রকল্প বা কোন কোন ক্যাটাগরির ভিসা হোল্ডারদের জন্য প্রযোজ্য হবে এ ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। এ ছাড়া ভিসা নবায়ন বন্ধ হওয়ার পর লাখ লাখ শ্রমিক অবৈধ হয়ে পড়বে ও তারা কী করবে এ বিষয়েও কিছুই বলা হয়নি।