স্কুল কলেজ খোলার ব্যাপারে আরো চিন্তা করা প্রয়োজন

স্কুল কলেজ খোলার জন্য তোড়জোড় চলছে। সরকারকে অনেকটা চাপের মুখে ফেলে কেউ কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। এক ডোজ টিকা দিয়ে ১৫ লাখ মানুষ এখনও দ্বিতীয় ডোজের জন্য প্রহর গুনছে। পাশের দেশ ভারতের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতিদিন সারা বিশ্বে করোনায় মারা যাওয়ার অর্ধেকই ভারতের। বাংলাদেশের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ভারত। সেখানে আমাদের সন্তানদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে স্কুল কলেজ খোলার যৌক্তিকতা আসলে কোথায়। সন্তানের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার জন্য কিছু অভিভাবকও উঠে পড়ে লেগেছে। মানি ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু টিকা নিশ্চিত না করে বা পরিস্থিতি আর একটু স্বাভাবিক হওয়ার আগে স্কুল কলেজ খুলে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আমরা ধৈর্য ধরেছি। আর একটু ধরলে সমস্যা কোথায়। বিশেষ করে ভারতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই সরকারের সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। কথায় বলে ‘ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না।’ তাই স্কুল কলেজ খোলার ব্যাপারে আরো চিন্তা করা প্রয়োজন।
কয়েকদিন আগে আনন্দবাজার পত্রিকায় ভারতীয় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষের সাক্ষাতকার পড়েছিলাম। তিনি বলেছেন,, ‘‘অনেক বাড়িতেই শিশুটি দাদু, ঠাকুমা, দিদিমা অর্থাৎ বাড়ির প্রবীণদের কাছেই বেশি সময় থাকে। তাদের কোলেপিঠে ওঠে, খেলা করে। এ সময়ে বয়স্কদের কাছে শিশুদের বেশি পাঠাবেন না। কারণ শিশুরা কিন্তু করোনার বাহক হতে পারে, সে করোনায় আক্রান্ত হলেও উপসর্গহীন হতে পারে। ফলে বাড়ির বয়স্কদের ঝুঁকি বাড়বে।’’
এখন প্রশ্ন হলো, আপনার যে শিশুটি স্কুল কলেজে যাবে তার সাথে কি করোনা আসবে না। শিশুটি এতদিন ঘরে আছে তাই আপনিও নিরাপদ। কতদিন ঘরে আটকে থাকবে, এমন বোকার মতো প্রশ্ন করে তাকে বাড়ির বাইরে বের করে দেয়া কি সমিচীন হবে। অন্তত আরো কিছুদিন অপেক্ষা করুন। প্রকোপ তো নিয়ন্ত্রনের মধ্যেই আসছে। শেষ পর্যায়ে এসে এতো তাড়াহুড়োর কোন মানে আছে কি?
কাজী আবুল মনসুর, সিনিয়র সাংবাদিক ও সভাপতি চট্টগ্রাম রিপোর্টর্স ফোরাম।