সমুদ্রের তীরঘেঁষে হুমায়ূন আহমেদের ‘সমুদ্র বিলাস’ কটেজ

অপরূপ সেন্টমার্টিনের যেন আলাদা একটি সৌন্দর্য নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘সমুদ্র বিলাস’ কটেজ। সমুদ্রের তীরঘেঁষে নির্মাণ করা হয় কটেজটি। সকাল-বিকেল রঙ বদল করা সেন্টমার্টিনের অনেক রঙ-রূপের দেখা মেলে সমুদ্র বিলাস থেকে। সেই সঙ্গে সাগরের গর্জন ও সমুদ্র থেকে আসা বিশুদ্ধ বাতাস তো আছেই।

আনন্দের খবর হলো, এই কটেজে চাইলে যে কেউ থাকতে পারে। সমুদ্র বিলাস ভাড়া দেয়া হয়। তবে সেখানে থাকতে হলে তুলনামূলক বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে। একদিনের জন্য ডাবল শয্যার ঘরের ভাড়া চার হাজার এবং দম্পতিদের ঘরে ভাড়ায় গুনতে হবে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।

humaon4

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাড়ার টাকা যায় হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের কাছে। বছরে একাধিকবার তিনি সেখানে যান। গত কয়েক দিন আগেও পরিবার নিয়ে সমুদ্র বিলাসে সময় কাটিয়ে এলেন শাওন।

সমুদ্র বিলাসের ম্যানেজার সেলিম বলেন, ‘সমুদ্র বিলাস ভাড়া দেয়া হয়। এখানকার ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। কাপল (দম্পতি) থাকলে ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার টাকা। ডাবল চারজন থাকলে ৪ হাজার টাকা।’

humaon4

কটেজটির আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘সমুদ্র বিলাস ঢাকা থেকেই বুকিং হয়ে যায়। দু-একটা খালি থাকলে সেগুলো বুকিং দেয়া যায়। ম্যানেজার আছে, খালি থাকলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভাড়া পাওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য জায়গা থেকে এখানে ভাড়া বেশি। কারণ এখানে সবসময় বুকিং থাকে। সমুদ্রের পাশে। খাওয়া-দাওয়া অর্ডার করলে এখানে খেতে পারবেন। না হলে বাইরে খেতে হবে।’

humaon4

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, হুমায়ূন আহমেদের শৈল্পিক মনের ছাপ তার সমুদ্র বিলাসে এখনও আছে। বাঁশ ও কাঠের তৈরি ফটক। কক্সবাজারের সৌন্দর্য নারকেল গাছও আছে উঠানে। সমুদ্র তীরে হওয়ায় ফটক থেকে উঠান পর্যন্ত ধুলার দেখাও মিলবে। অবশ্য কারও কারও কাছে কিছুটা অপরিচ্ছন্নও মনে হতে পারে। তবে ঘরের ভেতরের কারুকাজগুলো কেমন আছে, তা বাধার কারণে দেখা গেল না। যদিও কর্মরতদের দাবি, দর্শনার্থীদের ভাড়া দেয়া হলেও এখনো আগের সৌন্দর্য আছে।

কটেজটি সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। এর গেটে লেখা ‘কটেজের বোর্ডার ব্যতীত অন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ’। ভাড়া নেয়া ছাড়া অন্য দর্শনার্থীদের কটেজের সামনে গিয়ে ছবি তুলে কিংবা কিছু সময় অতিবাহিত করে চলে আসতে হয়। কটেজে দর্শনার্থীদের বেশি আগমন ঘটায় তার সামনে দোকানপাট গড়ে উঠেছে। খাবার, পোশাক, স্থানীয় ও বার্মিজ পণ্যের দোকান ছাড়াও শুঁটকির দোকান গড়ে উঠেছে।

humaon4

কটেজ ও অন্যান্য দোকানের নানামুখী আর্থিক স্বার্থের কারণে সমুদ্র বিলাসের নামে সেখানে প্রচারও কম চলে না। যেমন- সেখানকার রূপসী নামের এক হোটেলের দেয়ালে লেখা ‘মেইন বীচ এই দিকে, লেখক ড. হুমায়ূন আহমেদের বাসা।’

স্থানীয়রা বলেন, সেন্টমার্টিনে মূল বিচ বলে কিছু নেই। এর চারপাশটাই বিচ। সব জায়গায়ই দর্শনার্থীদের পদচারণা। একেক পাশের সৌন্দর্য একেক রকম।