গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে না লিখিত পরীক্ষা

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে না লিখিত পরীক্ষা। পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ)। আগের সিদ্ধান্ত মতো তিনটি বিভাগেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগ পরিবর্তনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে। সেইসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলের ওপর নম্বরও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে। অর্থাৎ একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী একটি পরীক্ষা দিয়েই যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তির সুযোগ পাবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই নিজ বিভাগের পাশাপাশি অন্য বিভাগভুক্ত বিষয়েও ভর্তি হওয়া যাবে। সেভাবেই বিষয়ভিত্তিক আসন রাখা হবে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক কার্যক্রমের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তবে ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে সেটি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে তিনদিনে তিনটি পরীক্ষা। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র থাকবে। শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামতো পরীক্ষাকেন্দ্র পছন্দ করতে পারবেন।

শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয়বার (২০১৯ ও ২০২০) পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেন। তবে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেবে সেটি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে।
সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১৯ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায়। ১লা ডিসেম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলর তিনটি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফের গতকাল মানবণ্টন ও পরীক্ষা পদ্ধতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তারা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, যারা ২০১৯ এবং ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করবেন তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষার প্রশ্ন এমসিকিউ পদ্ধতিতে হবে। তিনটি বিভাগের জন্য আলাদা তিনটি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে মানবিক বিভাগের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম মোট জিপিএ-৬ থাকতে হবে। তবে যেকোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৩ এর কম হলে হবে না। বাণিজ্য বিভাগের জন্য ওই দুই পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৬ দশমিক ৫ থাকতে হবে। এখানেও কোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৩ এর নিচে থাকলে হবে না। আর বিজ্ঞানে দুই পরীক্ষায় ন্যূনতম মোট জিপিএ-৭ থাকতে হবে। এখানেও কোনো পরীক্ষায় জিপিএ-৩’র নিচে থাকলে আবেদন করা যাবে না।

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, মানবিক বিভাগের পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ব্যবসায় শিক্ষায় (বাণিজ্য) হিসাববিজ্ঞান (২৫ নম্বর), ব্যবস্থাপনা (২৫ নম্বর), ভাষা ( ২৫ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ১৩ ও ইংরেজিতে ১২ নম্বর) এবং আইসিটি (২৫ নম্বর) বিষয়ে পরীক্ষা হবে। আর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ভাষা (২০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ১০ ও ইংরেজিতে ১০ নম্বর), রসায়ন (২০ নম্বর), পদার্থ (২০ নম্বর) এবং আইসিটি, গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে আইসিটি, গণিত ও জীববিজ্ঞানের মধ্যে যেকোনো দু’টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। যার প্রতিটির নম্বর হবে ২০ করে।

সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ১লা ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ভাইস চ্যান্সেলরদের এক সভায় এবার আরো ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা হবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। এগুলো হলো, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।