রাউজানে পৃথকস্থান থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার

রাউজান প্রতিনিধি:: চট্টগ্রামের রাউজানে ১ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক স্থান থেকে দুই নারী-পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কদলপুর ইউনিয়েনের ২নং ওয়ার্ডের সোমবাইজ্জা হাটের খালের পাশের বাগান থেকে জালাল আহমেদ (৭০) নামের এক ব্যক্তির ও গহিরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ধলই নগর এলাকার একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় গলায় ওড়নার সাথে ইটবাধা সুপর্না (৩২) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দু’টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।হত্যাকান্ডের কারন এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

 

৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের দলই নগর এলাকায় পদ্ম পুকুরে একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে সকাল ১১ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকৃত লাশটি পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডের শায়ের মো. চৌধুরীর বাড়ী মৃত মোজারুল হকের পুত্র মো. মনছুর আলমের স্ত্রী নাছরিন আকতার সূবর্ণা(২৫)। উদ্বার করা মহিলার লাশের দেহের বিভিন্ন স্থানে জখমের দাগ রয়েছে । মহিলার লাশ উদ্বারের সময়ে মহিলার লাশের গলায় রশি দিয়ে ইট বাধা দেখা যায় । এলাকার লোকজন জানান, সুর্বনার একটি এক বৎসর বয়সের ছেলে সন্তান রয়েছে । সুর্বনার স্বামী মানসুরের সাথে দাম্পত্য কলহের কারনে সুর্বনা তার পিতার বাড়ী ফটিকছড়ি চলে যায় । ফটিকছড়ি সুবর্নার পিতার বাড়ী থেকে সুর্বনাকে কেউ ফুসলীয়ে এনে রাউজানে হত্যা করে তার লাশ পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয় । সুর্বনার লাশ পুকুর থেকে উদ্বার করার সময়ে রাউজান রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম ও রাউজান থানার ওসি আবদুল্ল্যাহ আল হারুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ।
অপরদিকে, ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার কদলপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সোমবাইজ্যা হাট এালাকায় সোমবাইজহ্যার হাটের পশ্চিমে কদলপুল আইডিয়েল স্কুলের পাশে খালের পাড় থেকে জালাল আহম্মদ (৬০) নামের এক বৃদ্বার লাশ স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে গতকাল ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত লাশটি একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে ভোমরপাড়া গ্রামের ইদ্রিস চেয়ারম্যানের বাড়ির মৃত তনজিল আহমেদের পুত্র । বৃদ্বা জালাল আহম্মদরে ভগ্নি পতি এসকান্দর তার পুত্র বধু কোহিনুর আকতার বলেন, জালাল আহম্মদের সাথে তার পুত্র বাহাদুর ও শফিউলের সাথে তার সাথে বিরোধ চলে আসছে গত ৮ বৎসর ধরে। জালাল আহম্মদ তার বসতভিটা ছেড়ে কদলপুর ইউনিয়নের জয়নগর বড়ুয়া পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করতো । জালাল আহম্মদের পুত্র শফিকুল ও বাহাদুর জালাল আহম্মদের বিরুদ্বে কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরীর কাছে তাদের সাথে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ নিরসনের জন্য আবেদন করেন । গত ৭ ডিসেম্বর সোমবার জালাল আহম্মদ কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হয়ে সময় চাইলে কদলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরী সালিশি বৈঠকের সময় দেয় । এতে জালাল আহম্মদের পুত্ররা ক্ষুদ্ব হয়ে ভাড়াটিয়া কিছু যুবকদের নিয়ে জালাল আহম্মদকে লাঞ্চিত করে। গত ৭ ডিসেম্বর সোমবার সন্দ্ব্যায় জালাল আহম্মদ তার ভগ্নি পতি এসকান্দর হোসেনের কদলপুর সোমবাইজ্যার হাটস্থ বাড়ী থেকে বের হয়ে চলে যায় । গতকাল ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে জালাল আহম্মদের লাশ কদলপুর সোমবাইজ্যার হাটের পশ্চিমে কদলপুর আইডিয়েল স্কুলের পাশে খালের পাড়ে পাওয়া য্য়া । জালাল আহম্মদরে কন্যার জামাতা রাউজানের কেয়েপাড়া এলাকার বাসিন্দ্বা নয়ন চৌধুরী বলেন, তার শ^াশুড় জালাল আহম্মদ তার বসত বাড়ী ছেড়ে পাশ^বর্তী জয়নগর বড়ুয়া পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো । জালাল আহম্মদরে পুত্ররা তাকে তার বসতবাড়ীতে ফিরিয়ে আনার জন্য কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরীর সহায়তা চেয়েছেন । সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, গহিরায় উদ্ধারকৃত মহিলার লাশটি প্রাথমিকভাবে হত্যা বলে ধারনা করা হচ্ছে। অপরদিকে কদলপুরে উদ্ধারকৃত বৃদ্ধের লাশটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে। রাউজান থানার ওসি আবদুল্ল্যাহ আল হারুন বলেন, গহিরা দলই নগর পুকুর থেকে উদ্বার করা সুর্বনার লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে । সুর্বনাকে হত্যা করা হয়েছে । এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে । কদলপুর থেকে উদ্বার করা বৃদ্ব জালাল আহম্মদের লাশ উদ্বার করা হয়েছে। জালাল আহম্মদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে । এ ব্যাপারে রাউজান থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে । ময়না তদন্ত রির্পোটে হত্যাকান্ডের রিপোর্ট পেলে এটা ও হত্যা মামলা করা হবে ।