টিকায় ধনী-গরীব বৈষম্য

আশঙ্কা ছিল আগেই। সময় যতো গড়াচ্ছে ততোই তা স্পষ্ট হচ্ছে। গরীব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় আগে-ভাগেই করোনার টিকা পাচ্ছেন ধনী দেশের নাগরিকেরা। করোনায় এমনিতে পৃথিবী খুব খারাপ একটা সময় কাটাচ্ছে। প্রতিমুহুর্তে আসছে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংবাদ। এরমধ্যে আশা জাগাচ্ছে টিকা। ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টিকা পেতে যাচ্ছে মানুষ।

কিন্তু যেটা দেখা যাচ্ছে, ধনী দেশগুলো সহসাই টিকা পেতে যাচ্ছে।
আগামী মাসেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির মতো দেশগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হতে পারে। কিন্তু উন্নয়নশীল বা গরীব দেশগুলোতে কবে এ টিকা আসবে তা এখনই কেউ হলফ করে বলতে পারছেন না। ধনী দেশগুলোর সঙ্গে যে কয়েকমাস বা তারও বেশি সময় ব্যবধান তৈরি হবে তা একেবারেই স্পষ্ট।

ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে আবেদন করা হয়েছে। দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আগামী ১০ ডিসেম্বর টিকার অনুমোদন সংক্রান্ত একটি বৈঠকে বসবে। ২৫শে ডিসেম্বরের আগেই টিকার ব্যবহার শুরু হতে পারে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির টিকা আসতে কিছুটা বিলম্ব হলেও বৃটেনে করোনার টিকা দেয়া শুরু হতে পারে ১লা ডিসেম্বর থেকে। ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন চলতি সপ্তাহেই দিতে পারে দেশটি।

স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাজ্যের টিকা দেখভালের দায়িত্বে থাকা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) ফাইজারের টিকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সরকার এমএইচআরএকে ফাইজারের টিকাটি পরীক্ষার জন্য বলে। ইতিমধ্যে দেশটি চার কোটি ডোজ টিকার অর্ডার দিয়েছে। তবে এ বছরে এক কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ বলেছেন, জানুয়ারি মাস থেকে ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করবে তাঁর দেশ। তিন মাসের মধ্যে দেশটির মোট জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশের জন্য টিকা নিশ্চিত করা হবে। জার্মানিও আগামী মাসে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া শুরু করতে পারে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই বছর ইউরোপে একটি টিকার অনুমোদন হবে বলে আশাবাদী হওয়ার কারণ রয়েছে।’