ক্রসব্রিড বকনা বাছুরের পরিবর্তে দেশীয় বাছুর

শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের রাউজানের সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ‘সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে’এর আওতায় উন্নত জাতের ক্রসব্রিড বকনা বাছুরের পরিবর্তে দেশীয় গরুর বাচুর দেওয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।

রবিবার দুপুর ২টায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বাচুর বিতরণী অনুষ্ঠানে কাগজে কলমে এক রকম, বাস্তবে আরেক রকম হওয়ায় এসব বাচুর ফেরত পাঠান রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ করির সোহাগ। উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্র মতে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ‘সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে’এর আওতায় রাউজানে ৫২টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী পরিবারের মাঝে উন্নত জাতের ক্রসব্রিড বকনা বাছুর বিতরণ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩টি বিতরণের তারিখ নির্ধারণ ছিল গতকাল রবিবার। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সব আয়োজন ঠিকঠাক ছিল। উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গনে বেধে রাখা হয় ৩টি দেশী জাতের গরুর বাছুর। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ কবির, উপকারভোগী ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর ৩টি পরিবার, উপজেলা প্রাণী সম্পাদক কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৩টি পরিবারের মাঝে বাছুর বিতরণী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তিনি ভিডিও কনফারেন্সে দেখতে পান দেশীয় ছোট আকৃতির তিনটি বাচুর। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদারক করতে পরামর্শ দিলে তিনি তদারক করে দেখেন কাগজে-কলমে লিখা আছে ‘উন্নত জাতের ক্রসব্রিড বকনা বাছুর’। পরে তিনি বাছুর তিনটি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নিকট ফেরত পাঠান। এই প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, উন্নত জাতের ক্রসব্রিড বকনা বাছুরের পরিবর্তে দেশী গরুর বাছুর পাঠিয়েছেন ঠিকাদার। এমপি মহোদয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঠিকাদারের নিকট ফেরত পাঠিয়েছি।’ বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে টিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কন্ট্রাক্টর জোসেক কর্তা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম টেনটেক ইন্টারন্যাশনাল দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ধীরেন্দ্র নাথ দাশ বিষয়টি বলতে পারেন। আমি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ রাউজানে বাছুর বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলাম না। তিনি বলেন, এগুলো দেশী গরুর বাছুর কিনা আমি জানিনা। উপজেলা প্রাণী সম্পদের কর্মকর্তারা পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন। তিনি দাবি করেন ভ্যাট এবং অন্যান্য খরচসহ প্রতিটি বাছুর ৫০ হাজারের বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে রাউজান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাউজানে যে ৩টি বাচুর পাঠানো হয়েছে ৩টি দেশী গরুর বাছুর। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এ কাজ করেছে। কাগজে কলমে উন্নত জাতের ক্রসব্রিড বকনা বাছুরের ক্রয় ভ্যাট ছাড়া ৫০ হাজার টাকা হলেও এই বাচুরগুলো সিরাজগঞ্জ থেকে কেনা হয়েছে সেখানকার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রতিটি বাচুর আনুমানিক ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে হবে।’