তক্ষক কিনতে আসা হেলালের পুঁতে রাখা গলিত মরদেহটি উদ্ধার

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তক্ষক কিনতে এসে এক বছর আগে নিখোঁজ ‘এনজিও কর্মকর্তার গলিত মরদেহ’ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআিই)।

দুইদিনের চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার সন্ধ্যায় উপজেলার রামগড় গহীন জঙ্গলের ৫০ ফুট গভীর একটি পরিত্যক্ত কূপ থেকে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা মরদেহটি ঢাকার মুগদা থানার মদিনাবাগ এলাকার বাসিন্দা মো. হেলাল উদ্দিনের বলে জানিয়েছে পিবিআই। নিখোঁজ হেলাল উদ্দিন সেতুবন্ধন নামে একটি এনজিওতে কর্মরত ছিলেন।

তক্ষকের ক্রেতা সেজে ফাঁদে ফেলে পিবিআই টিম বুধবার গ্রেফতার করে বিল্লালকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল জানান, হেলালকে হত্যা করে লাশ খাগড়াছড়ির কাছে ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার পাহাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। তক্ষকের দামে বনিবনা না হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর বুধবার বিকেলে বিল্লালকে নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য যায় পিবিআই টিম।
পিবিআই’র চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন বলেন, ‘মূল রাস্তা থেকে পাহাড়ি পথে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা হেঁটে যেতে হয়েছে ঘটনাস্থলে। সেখানে প্রায় ৫০ ফুট গভীরতার একটি গর্ত আমাদের দেখিয়ে দেয় বিল্লাল। সেখানে লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে বলে সে আমাদের জানায়। কিন্তু একবছর ধরে ওই গর্তে মাটি, ময়লা-আবর্জনা পড়েছে। গর্তের মধ্যেই মাটির স্তূপ হয়ে গেছে। সেগুলো সরিয়ে আশপাশের আরও মাটি খনন করে কঙ্কালটি পাওয়া গেছে। এটিই নিখোঁজ হেলালের কঙ্কাল বলে বিল্লাল শনাক্ত করেছে।’ ঢাকার মুগদা থানার মদিনাবাগ এলাকার বাসিন্দা মো. হেলাল উদ্দিনের। তিনি গত বছর নভেম্বরে নিখোঁজ হয়েছিলেন।

নাজমুল হাসান জানান, গত বছর ঢাকা থেকে ফটিকছড়িতে একটি চক্রের কাছে তক্ষক কিনতে এসেছিলেন হেলাল উদ্দিন। দাম নিয়ে চক্রটির সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে তারা হেলালকে আটকে রাখে। পরে হেলালের পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। হেলালের পরিবার ৯ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল তাদের। পরে তারা হেলালকে হত্যা করে মরদেহ নুরপুর এলাকার একটি পাহাড়ে পুঁতে রাখে।

তিনি জানান, হেলালের কোনো খোঁজ না পেয়ে তার পরিবার ভূজপুর থানায় মামলা দায়ের করে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে হস্তান্তর হয়। জুলাই মাসে পিবিআই জাকির হোসেন রুবেল নামে একজনকে গ্রেফতার করে। জাকির হোসেন রুবেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে জানায়, তার মোটরসাইকেলে করে হেলালকে রাজা ভাই নামে একজনের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সেখানে ইসমাইল, সাদ্দাম ও বিল্লালকে দেখেছিলেন।

নাজমুল হাসান বলেন, এ মামলায় বুধবার বিল্লাল ও রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা হেলালের মরদেহ নুরপুর এলাকার একটি পাহাড়ে পুঁতে রেখেছিল বলে জানায়। বুধবার বিকেলেই বিল্লালকে নিয়ে মরদেহ উদ্ধারের জন্য সেখানে যাই। বিল্লালের দেখানো মতে পুঁতে রাখা মরদেহটি বৃহস্পতিবার উদ্ধার করি।