চীনে বাংলাদেশ থেকে প্রথম বিলেট রফতানি

চীনে বিলেট রফতানির মধ্য দিয়ে রফতানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো বাংলাদেশের জিপিএইচ ইস্পাত। বুধবার (১৮ নভেম্বর) ডিজিটাল প্লাটফর্মে চীনে বাংলাদেশ থেকে প্রথম বিলেট রফতানির শিপমেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, করোনাকালীন দুঃসময়ের মধ্যেও জিপিএইচ ইস্পাত বিলেট রফতানি করে দেশ ও জাতির জন্য সম্ভাবনা ও সুসংবাদ বয়ে এনেছে। তারা ইস্পাত জগতে বিশাল কর্মযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি বাড়ানোর জন্য তিনি বিভিন্ন দূতাবাসগুলোকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জিপিএইচ ইস্পাতের বিলেট রফতানির তথ্যটি পৌঁছে দেব। রফতানি বাস্কেটে জিপিএইচ ইস্পাত নতুন আইটেম সংযুক্ত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বানিজ্য মন্ত্রী নিজেকে একজন রফতানিকারক উল্লেখ করে বলেন, পোশাক শিল্পের মতো উৎপাদিত ইস্পাত সামগ্রী রফতানি করে জিপিএইচ ইস্পাত বৈদেশিক মুদ্রা আয়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা সৃজন করেছে। এ প্রেক্ষাপটে জিপিএইচ ইস্পাতকে এমএস বিলেট ও এমএস প্রোডাক্ট রফতানিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার আবেদনের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিবেচনায় রয়েছে।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। তখন প্লান্ট থেকে বেলুন উড়ানো হয়। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবল আলম বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত আমাদের প্রবীণ সদস্য ও উদীয়মান শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তারা নন ট্রেডিশনাল আইটেম বিলেট রফতানি করছে। বিলেট রফতানি করে বেসরকারি খাতের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনেছে। তাদের আগামীতে চট্টগ্রাম চেম্বার অধিকতর সহায়তা দেবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজ শুধু জিপিএইচ ইস্পাতের নয়, চট্টগ্রাম বন্দরেরও গর্বের দিন। এতে করে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অনুপ্রাণিত হবে।

কারখানা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি বলেন, জিপিএইচ ইস্পাত তাদের অসাধারণ দক্ষতা ও সক্ষমতা দিয়ে ‘স্টেট অব আর্ট’ প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করছে।

ট্রেড ও ট্র্যারিফ কমিশন চেয়ারম্যান মুনসি শাহাবুদ্দিন আহামেদ বলেন, মুজিবশতবর্ষ ও শেখ হাসিনার মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে এটি একটি নতুন সংযোজন।
স্বাগত বক্তব্যে জিপিএইচ গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রফতানির জন্য আন্তর্জাতিক মান অর্জন পূর্বক জিপিএইচ ইস্পাত অব্যবহৃত বিলেট রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭০-১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সমপরিমাণ রফতানি উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছি। সরকারি নীতিমালার সহায়তা পেলে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হব। আমরা আশা করবো বাংলাদেশের অন্যান্য ইস্পাত উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো একই সঙ্গে রফতানিতে এগিয়ে আসবে।

জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, আমাদের গুণগতমান ধরে রেখে বিশ্বব্যাপী ব্রান্ডিং করতে হবে।

তিনি এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করেন। তিনি অতীতের দীর্ঘ শ্রমে ঘামে গড়ে ওঠা এ প্লান্টের জন্য শ্রমিক কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ এর মিশন ও ভিশন ২০২০ এসে জিপিএইচ ইস্পাত বাস্তবায়ন করেছেভ।

তিনি শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, ট্রেড ও ট্র্যারিফ কমিশন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম চেম্বার প্রেসিডেন্ট, বন্দর চেয়ারম্যানসহ সব স্টেক হোল্ডারদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানে জিপিএইচ ইস্পাতের পরিচালক এমএ রউফ, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, আব্দুল আহাদ, আজিজুল হক রাজু, স্বতন্ত্র পরিচালক মোকতার আহামদ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক (এফঅ্যান্ডবিডি) কামরুল ইসলাম।