‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে স্যালুট দিতে না পারলে পাকিস্তান চলে যাও’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুর সব ভাস্কর্যকে স্যালুট দিয়ে চলতে হবে। যারা স্যালুট দিয়ে চলতে পারবে না, তারা পাকিস্তানে চলে যেতে পারে।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ।

চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমের সভাপতিত্বে এবং মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মায়মুন উদ্দিন মামুন ও আনোয়ার পলাশের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি জানান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুছ।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও মৌলবাদী শাসক গোষ্ঠী আবার লেজ নেড়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় যদি থাকতে হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর সব ভাস্কর্য স্যালুট দিয়ে চলতে হবে, আর না হয় পাকিস্তানে চলে যেতে পারো।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ বলেন, আপনারা সকলেই জানেন বাংলাদেশ হচ্ছে উদার একটি অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে একটি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, যারা একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল, পঁচাত্তরে পরাজিত হয়েছিল, বিভিন্ন সময়ে যারা মাথাচাড়া দিতে চেয়ে পরাজিত হয়েছিল আজকে তারাই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী । বাংলাদেশ যখন এশিয়ার মধ্যে অনন্য উচ্চতায় চলে গেছে, তখন মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো একত্রিত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছে।

গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক রাশেদ হাসান বলেন, আমরা সহনশীলতা দেখানোর ফলে এসব ধর্মান্ধরা জাতির জনকের ভাস্কর্য অপসারণের দাবি তোলার মতো স্পর্ধা দেখাতে পারছে। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুসহ জাতীর সূর্য সন্তানদের ভাস্কর্য দেশের প্রতিটি জেলায় উপজেলায় স্থাপন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদীদের আস্ফালন দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক শিবু প্রসাদ চৌধুরী, আবৃত্তি শিল্পী প্রণব চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান তারেক, আবু সাঈম সুমন, হোসেন আহমদ রুবেল, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইয়াছিন আরফাত কচি, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনির ইসলাম, জাবেদুল ইসলাম জিতু, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা কাজী নাঈম।

তারা বলেন আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনে বাধা প্রদান এবং স্থাপিত ভাস্কর্য নিয়ে ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ভেঙে ফেলার ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়েছে চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দেশের স্বাধীনতা ও ইতিহাসের অংশ। এই প্রজন্ম ভাস্কর্য দেখে শিখবে। ইতিহাস জানবে। এটা মূর্তি কেন হবে? বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে কোনোভাবে আশকারা দেওয়া ঠিক হবে না।