কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের বিষয়ে আবারও গুজব রটানো হচ্ছে

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের বিষয়ে আবারও বিভিন্ন গুজব রটানো হচ্ছে। ভিত্তিহীনভাবে বলা হচ্ছে ফাইজারের মতো মেসেঞ্জার আরএনএ বিষয়ক ভ্যাকসিনগুলো মানুষের ডিএনএকে বদলে দেবে। আরও বলা হচ্ছে বিল গেটস মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ সংযুক্ত করতে গণহারে টিকাদানের প্রকল্পে অর্থায়ন করছেন।

বছরের পর বছর ধরে টিকা বিষয়ক এই অপপ্রচারগুলো চলে আসছে। তবুও মানুষ এই ধরনের অপপ্রচারে বিশ্বাস করছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত ২৮ শতাংশ (১৬৪০ জনের মধ্যে) এসব অপপ্রচারে বিশ্বাস করছেন। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে এর মধ্যে ৪৪ শতাংশ হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুসারী একটি পোর্টালের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি এমিরাল্ড রবিনসন একটি টুইটে নিজের আড়াই লাখ ফলোয়ারকে বলেন ফাইজার ভ্যাকসিন ডিএনএকে বদলে দেবে। যা একেবারেই ভিত্তিহীন।

অপপ্রচারকারীরা তাদের তথ্যের সপক্ষে কোনও যুক্তি দেখাতে পারেনি। এদিকে বিবিসি তিনজন স্বাধীন বৈজ্ঞানিককে এসব তথ্যের সত্যতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনজনই বলেন মেসেঞ্জার আরএনএ ভ্যাকসিন মানুষের ডিএনএর উপর কোনও প্রভাব ফেলে না।

ভ্যাকসিন নিয়ে এমন অপপ্রচার এবারই প্রথম নয়। এর আগে পোলিও ভ্যাকসিনের সময়েও বিল গেটসকে নিয়ে এমন অপপ্রচার চালানো হয় আফ্রিকায়।

উল্লেখ্য, টিকা চিকিৎসা বিজ্ঞানে আশির্বাদ হয়েই এসেছে। মানব সভ্যতার প্রতি হুমকিস্বরূপ নানান অসুখকে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে টিকার মাধ্যমে। এর মধ্যে গুটি বসন্তকে চিরতরে মুছে দেওয়া গেছে এবং পোলিওর মতো ভয়াবহ অসুখকে প্রায় নির্মূল করে ফেলা হয়েছে।

একটি টিকা গণহারে মানুষের শরীরে প্রবেশ করানোর আগে তিন ধাপে পরীক্ষা করে ন্যূনতম ঝুঁকিটিও যাচাই করে নেওয়া হয়। এই তিন ধাপের কোনও ধাপে যদি একজন মানুষের শরীরেও টিকার বিরূপ প্রভাব পড়ে তাহলে টিকাটি বাতিল হয়ে যায়। এই তিন ধাপের পরীক্ষা শেষে একটি টিকাকে অনুমোদন দেওয়া হয়। তাই একটি অনুমোদিত টিকাকে নিরাপদ বলা যায়।

তাই টিকা বিষয়ক কোনও অপপ্রচার বিশ্বাস করার আগে বৈজ্ঞানিকদের মতামত যাচাই করে নেওয়ার অনুরোধ করছেন বিশেষজ্ঞরা।