গত ৫ নভেম্বর টেকনাফ থেকে ঢাকায় নিয়ে বিক্রির পর ঢাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পথে বাকলিয়া থেকে অস্ত্রসহ আব্দুর রাজ্জাক নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যে টেকনাফ হ্নীলা লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে মো. কামাল নামে আরও একজনকে আটক করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
আব্দুর রাজ্জাক ও মো. কামালকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে বাকলিয়া থানা পুলিশ। রিমান্ডে তাদের দুইজনের কাছ থেকে ফোরকান প্রকাশ মাসুদের বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ। পরে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সকালে অভিযান চালিয়ে ফোরকানকে আটক করে পুলিশ।
ফোরকানের দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে মোবারক হোসেন ও মো. রাসেলকে আটক করে এবং বহদ্দারহাটে ফোরকানের নিউ চাঁন্দগাও আবাসিকের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ নগদ ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৬২২ টাকা, ২৩ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১২টি চেক বই উদ্ধার করে এবং ফোরকানের স্ত্রী শামীম আরা শমীকে আটক করে। এ ঘটনায় পৃথক মামলা দায়ের হয়।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) ফোরকান, তার স্ত্রী শামীম আরা শমী, মোবারক হোসেন ও মো. রাসেলকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে বাকলিয়া থানা পুলিশ। রিমান্ডে ফোরকানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে আরও তিন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতার তিনজন হলো- মো. তাহের (২৬), মো. আলী জোহর (২৮) ও আসমা আক্তার (২২)। আসমা আক্তারের স্বামী মো. শফি (২৬) পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদের মধ্যে মো. তাহের ও মো. আলী জোহর কক্সবাজার জেলা উখিয়া উপজেলার রাজাপালং এলাকার বাসিন্দা এবং আসমা আক্তার ভোলা জেলার চরফ্যাশন আসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, আব্দুর রাজ্জাক ও মো. কামালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে ফোরকান, তার স্ত্রী শামীম আরা শমী, মোবারক হোসেন ও মো. রাসেলকে গ্রেফতার করেছিলাম। তাদের চারজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে মো. তাহের, মো. আলী জোহর ও আসমা আক্তারকে গ্রেফতার করেছি। তাদের কাছ থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, গ্রেফতার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা একটি নেটওয়ার্কের মধ্যে কাজ করে। এরা বিভিন্নজন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে। কেউ ইয়াবা বহন করে, আবার কেউ মালিক। এটি তাদের বিশাল একটি গ্রুপ। তাদের চক্রে রয়েছে সারাদেশ থেকে সদস্য।
আব্দুর রাজ্জাকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
অস্ত্রসহ গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাককে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার (১৫ নভেম্বর) আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আব্দুর রাজ্জাক। জবানবন্দিতে আব্দুর রাজ্জাক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানান ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন।
ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, আব্দুর রাজ্জাক ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছেন। এসব তথ্য আমরা যাচাই করছি।
রিমান্ড শেষে অপর আসামি মো. কামালকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানান ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন।