কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না, জেলেরা বিপাকে

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বুক ভরা আশা নিয়ে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ ধরতে নেমেছিলেন ভোলার জেলেরা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। তাদের পক্ষে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে তিন বেলা দু-মুঠো খাবার তুলে দেয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার মনপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মদনপুর গ্রামের জেলে মো. আল-আমিন বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর আমরা নদীতে গিয়ে সারাদিন জাল ফেলে ২-৩টির বেশি মাছ পাচ্ছি না। নিষেধাজ্ঞার সময় অনেক ধার-দেনা করেছি। এনজিওর কিস্তি বাকি রয়েছে। ভেবেছিলাম নিষেধাজ্ঞার পর অনেক মাছ পেয়ে সব ঋণ পরিশোধ করবো। কিন্তু ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা এখন স্ত্রী-সন্তানদের মুখে তিন বেলা দু-মুঠো খাবার তুলে দেয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।

সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বালিয়া কান্দি গ্রামের জেলে মো. আজাদ বলেন, আগে নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে গিয়ে প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার টাকার মাছ ধরতাম। কিন্তু এ বছর নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে গিয়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকার মাছ পাই। এতে আমাদের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে।

Bhola-Elish-News

একই গ্রামের জেলে মো. মাইনউদ্দিন বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে গিয়ে ৩-৪টা যে মাছ পাই, তার সবগুলোর পেটেই ডিম ভরা। ডিম ছাড়া মাছ পাই না।

তিনি বলেন, এ বছর যদি সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সঠিক না হয় বা মা ইলিশ যদি ঠিকমত ডিম ছাড়তে না পারে তাহলে ভবিষ্যতে নদীতে ইলিশের সঙ্কট দেখা দেবে। জেলেদের তখন না খেয়ে থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা চিন্তিত।

তবে ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশের মৎস্য বিজ্ঞানী ড. মো. জলিলুর রহমান বলেন, মা ইলিশ ডিম ছেড়ে সাগরে চলে গেছে, তাই নদীতে ইলিশের পরিমাণ কম। কিছুদিন পর আবার নদীতে মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

Bhola-Elish-News

তিনি আরও জানান, এ বছর ইলিশের প্রজনন মৌসুমের সময় সঠিক হয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক গবেষণায় আমরা জানতে পেরেছি ৪০-৫০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। তাই নদীতে ভবিষ্যতে ইলিশ পাওয়া নিয়ে জেলেদের চিন্তিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, ভোলার সাত উপজেলার প্রায় তিন লাখ জেলে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। এদের মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ২৬০ জন। এ বছর ইলিশের প্রজনন মৌসুম ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়।