চুরি, অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধে এনইআইআর কার্যক্রম

অবৈধ পথে দেশে আসা, ক্লোন বা চুরি করা হ্যান্ডসেটে মোবাইল নেটওয়ার্কে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আর ৬ মাসের মধ্যে।

বিটিআরসির উপ-পরিচালক জাকির হোসেন খাঁন জানান, ২০২০ সালের শুরুতেই এই অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধে এনইআইআর কার্যক্রম বাস্তাবায়িত হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন।

ইতোমধ্যে গত ৫ নভেম্বর এই ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যক্রমে প্রযুক্তি সরবরাহ ও পরিচালনায় প্রতিষ্ঠান নেয়ার কাজ চূড়ান্ত করেছে বিটিআরসি। যার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেন্ডার ঘোষণা করেছিলো নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

নির্বাচিত কোম্পানিকে নির্দেশনা অনুযায়ী চুক্তি করে এনইআইআর এর কার্যক্রম চালু করে ফেলতে হবে ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে। ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করার সময়সীমা দিয়েছে বিটিআরসি।

সব মিলিয়ে এই এনইআইআর চালু হচ্ছে আগামী ৬ মাসের মধ্যে।

আর এর পর হতেই অবৈধ পথে দেশে আসা, ক্লোন বা চুরি করা হ্যান্ডসেটে মোবাইল নেটওয়ার্কে যোগাযোগ করা যাবে না। মানে এসব ফোনে এনইআইআর চালুর কিছুদিনের মধ্যে একদমই কোনো মোবাইল ফোন অপারেটরের সিম চলবে না।

ইতোমধ্যে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিটিআরসি ১১ কোটি ৮২ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৩টি আইএমইআই নম্বর ডেটাবেইজে যুক্ত করেছে। এভাবে বৈধ হ্যান্ডসেট এই ডেটাবেইজে যুক্ত হতে থাকবে।

এনইআইআরে এই ডেটাবেইজের সঙ্গে মোবাইল অপারেটরে চালু হওয়া মোবাইলের আইএমইআই যাচাই করা হবে, মানে মিলিয়ে দেখা হবে। অপারেটরে চালু হওয়া মোবাইলের আইএমইআই যদি ডেটাবেইজের আইএমইআইয়ের সঙ্গে না মেলে তাহলে সেটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ওই হ্যান্ডসেটে আর সিম সচল হবে না।

তবে ২০১৯ সালের আগস্টের আগে কেনা সিম চালু আছে এমন কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট বা ফোন বন্ধ হচ্ছে না। আর এই সময়ের পরে কেনা অবৈধ ফোনগুলোর জন্য নিবন্ধনের সুযোগ মিলতে পারে, তবে এটি এখন চূড়ান্ত করা হয়নি।

যদিও মোবাইল ফোন অপারেটররা এনইআইআর চালুর আগ পর্যন্ত নেটওয়ার্কে সচল থাকা অবৈধ হ্যান্ডসেটগুলো চালু রাখতে চায়। এ বিষয়ে বিটিআরসি এনইআইআর চালুর পরই সিদ্ধান্ত নিতে চায়।

এছাড়া বিদেশে হতে আত্মীয়স্বজনের পাঠানো বা নিজে নিয়ে আসা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের সুযোগ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে কয়টি হ্যান্ডসেট ও কীভাবে নিবন্ধন হবে তার নির্দেশনা দেবে বিটিআরসি।

এদিকে এই এনইআইআরের কাজ পেয়েছে সেনেসিস আইটি, রেডিসন টেকনোলজি ও কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড। কোম্পানি তিনটি যৌথভাবে এ কাজ করবে। বিটিআরসি ইতোমধ্যে জয়েন ভেঞ্চারের লিড কোম্পানি হিসেবে সেনেসিস আইটিকে নোটিফিকেশন অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে।

এই কাজ পেতে টেন্ডারে প্রাথমিক বাছাই হয়েছিলো আরও তিন কোম্পানি- রিভ সিস্টেম, ডেটাএজ, ডিজিকন টেকনোলজিস।

কাজ পাওয়া কোম্পানি প্রায় ৩০ কোটি টাকায় এই কাজ করবে। এরমধ্যে ২৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬৯ মার্কিন ডলার এবং ১০ কোটি ২ লাখ ৯২ হাজার ৯৫০ টাকা রয়েছে।

অবৈধ, নকল ও চুরি যাওয়া হ্যান্ডসেট বন্ধে বিটিআরসির চেষ্টা বেশ কয়েক বছরের। ২০১২ সালে প্রথম এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। অবশেষে ৮ বছরে এসে তা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।