চট্টগ্রাম আঞ্চলিক থেকে আন্তর্জাতিক গুরুত্বের অভিধায় উন্নীত

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেছেন, চট্টগ্রাম শুধুমাত্র বাংলাদেশর অর্থনৈতিক হৃদপিন্ড নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নবজাগতি ও সমৃদ্ধির সৃষ্টিশীল বলয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই স্বপ্ন ও প্রত্যাশার প্রাপ্তি যোগের বিষয়টি নিজের মেধা, মনন, চিন্তা-চেতনা ও পরিকল্পনা ধারণ করে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একমাত্র ট্যানেল নির্মাণ, একাধিক অর্থনৈতিক জোনসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। কারণ এই চট্টগ্রাম থেকে রিজিওনাল কানেক্টিভিটি কর্মপরিকল্পনা ঘুনধুম হয়ে মিয়ানমার ছুঁয়ে চীনের কুর্মিং সিটি পর্যন্ত আন্তঃদেশিয় সড়ক যোগাযোগ, চট্টগ্রাম বন্দর ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যসহ নেপাল ও ভূটানের সাথে ট্রানিজিট লিংক, অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১২টি দেশের বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার মিশন-বিভশন ২০৪০ পূরণের বাস্তবায়নে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তাই চট্টগ্রাম এখন আঞ্চলিকতার গন্ডি পেড়িয়ে আন্তর্জাতিকতার অভিধায় অভিষিক্ত। আজ সকালে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন। এই সময় খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়ন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে বেপজা, বন্দর ও কাস্টমস্ থেকে বাৎসরিক আয়ের একটি নির্ধারিত অংশ পরিশোধ এবং চসিকের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সেবাখাতগুলোর কর্মক্ষমতার পরিধি প্রসারে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তাঁর দেয়া চাহিদা পত্রে উত্থাপিত দাবীগুলো তুলে ধরেন। ড. কায়কাউস আহমেদ এর সাথে সহমত পোষণ করে বলেন, এই মাটির সন্তান হিসেবে আমি চট্টগ্রামের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কথা বুঝি। এই চাওয়া-পাওয়া পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের করনীয় দায়িত্ব কাঁদে তুলে নিয়েছেন। তিনি চসিক প্রশাসককে তাঁর চাহিদা পত্র অনুযায়ী দাবী গুলো পূরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রাখতে সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এদিকে ঢাকায় আজ চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন কর্মব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিষয়ক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আবদুল মান্নানের সাথ্যে তাদের নিজ নিজ দপ্তরে সাক্ষাত করেন।
স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি’র সাথে স্বাক্ষাতকালে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। তবে মাদক, নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শতভাগ জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে। অপরাধী সনাক্ত করণে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও পুরো নগরীকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। স্বরাস্ট মন্ত্রী এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিষয়ক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের সাথে সাক্ষাতকালে চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে আপনার ভালো ধারণা আছে। চট্টগ্রামে কভিড-১৯ মোকাবেলায় গঠিত তদারকী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসিবে আপনার ইতিবাচক ভূমিকায় চট্টগ্রাম নগরবাসী উপকৃত হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ডেউ মোকাবেলায় চসিক প্রস্তুত। স্বাস্থ্য বিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে জনসচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এব্যাপারে সহযোগিতার আম্বাস দেন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বন্দর, বেপজা ও কাস্টমস থেকে তাদের আয়ের একটি অংশ দেয়ার ব্যাপারে করণীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রতিশ্রæতি দেন।
স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আবদুল মান্নানের সাথে স্বাক্ষাতকালে চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাত দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হলেও বর্তমানে গতি হারিয়েছে। সরকারি ভাবে এই নগরীতে স্বাস্থ্য সেবা অপ্রতুল। ষাট লাখের বেশি নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে যে আর্থিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা চসিকের নেই। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রণোদনা খুবই প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আবদুল মান্নান বলেন, চসিক ইপিজেড এলাকয় মাতৃসদন ও হাসপাতাল নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে যে চাহিদা পত্র দিয়েছিল তা বিবেচনায় আজই মন্ত্রণালয়ে সভা হয়েছে এবং সভায় এর অনুকূলে অনুমোদন দেয়া হয়।