মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির অপকর্মের নিউজের জের

দৈনিক সকালের সময় সম্পাদকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত পিটিশন

  চট্টগ্রামের বিতর্কিত যুব মহিলা লীগের নেত্রী মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায়  দৈনিক সকালের সময় সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নূর হাকিমসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য প্রযুক্তি আইনে সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি পিটিশন  দাখিল করেছেন তিনি। পিটিশনে অন্যান্য বিবাদীরা হলেন দৈনিক সকালের সময়ের বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ কামাল উদ্দিন, নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ নজরুল ইসলাম দৈনিক মুক্তবাণী সম্পাদক ও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ববিতা বড়ুয়া এবং চট্টগ্রাম মহানগর যুবমহিলা লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য সোনিয়া আজাদ। আদালত পিটিশনটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সিএমপির পাহারতলী থানায় পাঠানো হয়েছে। পিটিশনের বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পাহারতলী থানার এসআই মোঃ আফসার বলেন  সাইবার ট্রাইব্যুনাল থেকে একটি পিটিশনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিবাদী মোস্তারী মোর্শেদ স্মৃতির অপকর্ম নিয়ে অনেকগুলো পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে সাংবাদিকদের মধ্যে শুধু সকালের সময়ের সাংবাদিকদের নামেই অভিযোগ আনা হয়েছে।  বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য  মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির অপকর্ম নিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে সকালের সময় ছাড়াও দৈনিক সাঙ্গু, পোস্ট কার্ড বিডি ডট কম,চট্টগ্রামের সময় ডট কম, চট্টগ্রাম সংবাদ প্রতিদিন, গোয়েন্দা বার্তা ,দৈনিক দেশবার্তাসহ বহু সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 

ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া নরসিংদী জেলা যুব মহিলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নুর পাপিয়ার পাপ কাজের অন্যতম সহযোগী চট্টগ্রামের স্মৃতি নামের এক মহিলা যুবলীগ নেত্রী। পাপিয়ার গ্রেফতার হওয়ার পর স্মৃতির সাথে ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাপিয়ার সাথে স্মৃতির একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি চট্টগ্রামের গণমাধ্যম কর্মী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরে আসলে যাতে কেউ সংবাদ প্রকাশ না করে তার জন্য টাকা পয়সা দিয়ে হউক অথবা যে কোন কিছুর বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। এমনকি এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার সময় ”দৈনিক সকালের সময়” পত্রিকার এই প্রতিবেদককে ঢাকা থেকে এক অনলাইন টিভির সাংবাদিক দিয়ে নিউজ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। পাপিয়ার সহযোগী মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির বিরুদ্ধে মাদক, ইয়াবাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালের দিকে নগরীর হালিশহর এলাকায় ৪ হাজার টাকায় ভাড়া বাসায় থাকলেও যথা সময়ে ভাড়া দিতে না পারায় জমিদার (বাড়িওয়ালা) বাসা থেকে বের করে দেন এই স্মৃতিকে। কিন্তু ৪ বছরের ব্যবধানে সেই স্মৃতি বনে যান গাড়ি, বাড়ি ও কোটি কোটি টাকার মালিক। মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির স্বামী মোহাম্মদ বেলালও তার স্ত্রীর সাথে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত বলে সেই সময় স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন। স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত না থেকেও চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের কমিটিতে তার নাম আসায় এ নিয়ে শুরু থেকে বির্তক ছিল। পাপিয়ার মাধ্যমে নেত্রী বানানো বা যুব মহিলা লীগের কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অনেকের কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এই প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত অভিযোগও করেছেন এক মহিলা নেত্রী। পাপিয়ার মাধ্যমে বড় বড় নেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে পদ পাইয়ে দেয়া, প্রশাসনের লোকজন, শিল্পপতিদের সাথে সখ্যতা গড়া এবং বিভিন্ন অসমাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ অহরহ। এছাড়া যুব মহিলা লীগের নেত্রীদের ইয়াবা ব্যবসা করার জন্য সরাসরি প্রস্তাব দিতেন বলে একাধিক নেত্রীর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আকতার মিতা (মিতা খান) তখন বলেছিলেন মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতির নামটি কমিটিতে আসার পর আমরা সবাই হতবাক হয়ে যাই, এরকম একজন বির্তকিত মহিলা নিয়ে কমিটির সবাই বিব্রত অবস্থায়, পাপিয়ার সাথে নিয়মিত সর্ম্পক রয়েছে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত বিষয়টি অনেকের জানা ছিল না । এ বিষয়ে নগর যুব মহিলা লীগের আহবায়ক অধ্যাপিকা সাইরা বানু রৌশনীও  বলেছিলেন যুব মহিলা লীগকে আমি অনেক কষ্ট ও শ্রম দিয়ে চট্টগ্রামে দাড় করিয়াছি, যে মহিলার নাম চট্টগ্রাম থেকে কোন নেতা প্রস্তাব করেনি, অথচ অনেক নেতা যোগ্য, শিক্ষিত, ভাল পরিবারের একাধিক মেয়ের নাম প্রস্তাব করছিল তাদের নাম আসেনি, স্মৃতির মত একজন খারাপ মেয়ের নাম আসায় পুরো যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের মত পদে চলে আসায় চট্টগ্রামে সাংগঠনিক কর্মকান্ড বির্তকিত হয়ে পড়ছে। এই বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিও দিয়েছিলেন যা চট্টগ্রামের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত হয়েছে। পাপিয়ার সাথে সর্ম্পক ও ছবি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে মোস্তারী মোরশেদ স্মৃতি সেই সময় পাপিয়ার সাথে ছবিগুলো ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের দাবি করেছিলেন এবং  নিয়মিত সর্ম্পকও ছিল বলে স্বীকার করেছিলেন তিনি।