জলে কুমির, ডাঙ্গায় শকুন : বিপাকে উপকূল

লিটন কুতুবী::
ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছাস প্লাবণ জোয়ার ভাটায় ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে বিলুপ্তির পথে উপকূলের নি¤œাঞ্চল। ভেঙে গেছে বিস্তৃর্ণ জনগোষ্টির বসতভিটি, জোয়ারে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার পরিবারের বসতঘর। অনেকে জলের কুমিরের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে না পেরে পাড়ি জমিয়েছে অন্যত্রে। সেখানেও নেই তাদের আতœসম্মান ও মর্যাদা। সব সময় স্বরণার্থীদের তালিকায় নাম লিখে থাকতে হয় তাদের। এমন করুণ চিত্র কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া উপকূলের জনগোষ্ঠির।
প্রবীণ আ’লীগ নেতা আলহাজ শামসুল আলম কুতুবী বলেন,গত শতাব্দির ৬০ দশকের পর থেকে এ পর্যন্ত কুতুবদিয়া দ্বীপের ভাঙ্গা গড়ার পরিনতি ক্রমসই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছাস,অমাবশ্যা,পূর্ণিমা এমনকি বৈরী আবহাওয়ায় প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে কুতুবদিয়া দ্বীপের নি¤œাঞ্চল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কয়েক বছর ধরে সাগরে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে দ্বীপ রক্ষা বাঁধ ভেঙে জোয়ার লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে। কুতুবদিয়া দ্বীপের ৪০ কিলোমিটার রক্ষা বাঁেধর মধ্যে ১৪ কিলোমিটার বাঁধ অরক্ষিত। বাঁেধর কিনারা থেকে এক শ্রেণীর বালু খোর প্রতিনিয়তই চর থেকে বালি নিয়ে যাচ্ছে। ডাঙ্গার শকূন থেকে রেহায় পাচ্ছে না উপকূলের চর। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যাক্তিরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চরের বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে। যার ফলে বেড়িবাঁধ মারাতœক হুমকির মুখে পড়েছে।
জেগে উঠা চর থেকে বালি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে কুতুবদিয়া দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠা চর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বড় বড় মালবাহি ট্রলারের বালি ভর্তি করে দৈনিক হাজার হাজার ঘনফুট বালি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু বালি ব্যবসায়ী। যে হারে বালি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে এতে জেগে উঠার চর বিলুপ্তি হলে দ্বীপ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তার পাশাপাশি দ্বীপের পশ্চিম উপকূলের বাঁধ রক্ষা করা দূরহ ব্যাপারে হয়ে পড়েছে।
উপকূলের জেলে মোসলেম উদ্দিন জানান, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে দেখা গেছে ড্রেজারের মাধ্যমে বালি উত্তোলন করে নৌকার মাধ্যমে কিছু সংখ্যক অসাধু বালি ব্যবসায়ী বাঁশখালী উপজেলার উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করার জন্য বালি নিয়ে যাচ্ছে। কুতুবদিয়া দ্বীপ রক্ষা চর থেকে বালি উত্তোলনের ফলে দ্বীপটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে কুতুবদিয়া দ্বীপের পশ্চিমে চর থেকে কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যাক্তি বালি উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। কুতুবদিয়া দ্বীপের মানুষের এমন অবস্থা দাড়িয়েছে জলে কুমির, ডাঙ্গায় শকূন, অচিরেই দ্বীপের অস্তিত্ব নিয়ে জীবন মরণ লড়াই।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুতুবদিয়া শাখার সভাপতি শফিউল আলম বলেন, দ্বীপের পশ্চিম চর থেকে যে হিসেবে বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে, অচিরেই দ্বীপ বিলুপ্তি হয়ে যাবে। বালি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।