জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ রক্ষায় তৎপর হওয়ার আহবান

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন জন প্রতিনিধি হিসেবে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ রক্ষায় তৎপর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নগরে জনসংখ্যার চাপ বেড়েছে। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধি, অতি বৃষ্টি-অনাবৃষ্টি , বন্যা-খরা, পাহাড় ধসে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে ‘জলবায়ু পরিবর্তনে দুঃস্থতা সমীক্ষা বিষয়ক কর্মশালায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে ও এলইউপিসি’র সিটি ম্যানেজার ড. সোহেল ইকবালের সঞ্চালনায় আলোচ্য কর্মশালার মতামত ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, মো.মোবারক আলী, ছালেহ আহমদ চৌধুরী, মো. শফিউল আলম, মনোয়ারা বেগম মনি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোডেকের প্রধান নির্বাহী কমল সেন গুপ্ত বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় জলবায়ু পরিবর্তনের দুঃস্থতা সমীক্ষা বিষয়ে উপস্থাপনা করেন এশিয়ান ডিজস্টার প্রিপেয়ার্ডন্সে সেন্টার (এডিপিসি)’র ফিজিক্যাল ভালনারেবল কো- অর্ডিনেটর মো. সাখাওয়াত হোসেন।

কর্মশালায় জলবায়ু পরিবর্তনের ( ভৌত ও আর্থ সামাজিক) বিপদাপন্নতা মূল্যায়ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আপদ, বিপদাপন্নতা মূল্যায়নে এক্সপোজার, সেন্সিটিভিটি এডাপ্টিভ ক্যাপাসিটি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে আপদকালীন সময়ে আক্রান্ত স্থানকে এক্সপোজ করা, মানব সৃষ্ট কারনে কোন স্থান বা সম্প্রদায়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বেশি বিপদাপন্ন করলে কিভাবে তা মোকাবেলা করা যায় এ বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে। অনুষ্ঠানে মানুষ, সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি সাধন করতে পারে এরূপ সম্ভাব্য ঘটনাকে আপদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আপদ গুলো হলো- বন্যা,খরা,ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছস, নদী ভাঙ্গন, লবণাত্ততা, খাবার পানির সংকট ও ভূমি ধস। সম্ভাব্য এই আপদ গুলোর কারনে যে সকল অবকাঠামো ও স্থান আক্রান্ত হতে পারে। এ গুলোর মধ্যে অবকাঠামো অথ্যাৎ সকল প্রকার আবাসিক ভবন, রাস্তাঘাট ব্রিজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন, হাসপাতাল, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ,বিদ্যুৎ, গ্যাস,পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে।

কর্মশালায় কাউন্সিলরগন নগরীর যে সকল স্থানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ লাগানো যায় কিনা,সৌর্ন্দযবধিত করন, ইউএনডিপি এর সহযোগিতা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সচেতনতা মূলক নাটক প্রর্দশন, খাল, নদী, সমুদ্রের ভাঙনের বিষয়কে বিবেচনায় আনা, সুপেয় পানির অভাব, পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জলবায়ু পরিবর্তনে দুঃস্থতা সমীক্ষা বিষয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক নিখুত প্রতিবেদন প্রস্তুতে আগামী সাত দিনের মধ্যে সকল কাউন্সিলরদের কাছে পত্র প্রেরনের মাধ্যমে মতামত নেয়া হবে। এজন্য তিনি সকল কাউন্সিলরদের জলবায়ু পরিবর্তনজনীত সম্ভাব্য ঝুঁকি ও আপদগুলো নির্ণয়ের আহবান জানান। জলবায়ু পরিবর্তনজনীত পরিবেশের সম্ভাব্য ভারসাম্যহীনতার বিষয় ও আপনদ সম্পর্কে ইউএনডিপির দুজন প্রতিনিধি আগামীকাল বুধবার চসিকের সাধারন সভায় কাউন্সিলদের অবহিত করবেন। পরবর্তীতে তারা ওয়ার্ড পর্যায়েও কাজ করবেন। উল্লেখ্য প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রতিনিধিদল নগরীর ১০ ওয়ার্ডে তাদের সমীক্ষার কার্যক্রম চলাবে।