ব্যারিস্টার হেলালকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ

কারাবন্দি বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

রোববার (১ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, আইনজীবী মো.আসাদুজ্জামান ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

দুদকের এ মামলায় হাইকোর্টে তিন বছর দণ্ড বহালের পর ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন গত ২৭ অক্টোবর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

খুরশীদ আলম খান জানান, দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন এবং রায় গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে আদেশ দেন। সে অনুসারে তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন। এরপর আপিল লিভ টু আপিল করে জামিন চেয়েছেন। আজ চেম্বার আদালত তাকে আগামী বছরের ৩১ মে পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন। আবেদনটি ওইদিন শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, তার আইনজীবীরা বলেছেন ৩ বছরের দণ্ডের মামলায় মীর হেলাল এখন পর্যন্ত এক বছর ৪ মাস ১০ দিন জেল খেটেছেন।

এর আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ ও ৩ বছর এবং তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে তিন বছরের দণ্ডসহ অর্থদণ্ড বহাল রেখেছিলেন হাইকোর্ট।

১৯ নভেম্বর খুরশীদ আলম খান জানান, দীর্ঘ ৪০ দিনের মতো আপিল শুনানি হয়েছে। আপিল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের তিন বছরের সাজা এবং জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদের অভিযোগে ১০ বছরের সাজা বহাল থাকলো। ওনার ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে সহযোগিতার (অ্যাবেটমেন্ট) জন্য তিন বছরের সাজা বহাল। ফাইনসহ বিচারিক আদালতে যেভাবে রায় দিয়েছিল সেটা বহাল। এখন এ রায় বিশেষ জজ আদালত ঢাকা-২ যেদিন রিসিভ করবেন সেদিন থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০০৭ সালের ৬ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাছির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ একই বছরের ৪ জুলাই এক রায়ে মীর নাছির উদ্দিনকে আলাদা ধারায় তিন বছর ও ১০ বছরের দণ্ড দেন। একইসঙ্গে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দুই বছরের দণ্ড দেন।

তার ছেলে মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক মাসের দণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আলাদা দু’টি আপিল করেন।

হাইকোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছিরের ও একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেন। হাইকোর্টের ওই রায় বাতিল চেয়ে আপিল আবেদন করে দুদক। ২০১৪ সালের ৪ জুলাই দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ে দেন আপিল বিভাগ।

রায়ে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে দুর্নীতি মামলায় খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছেন। একইসঙ্গে মামলাটির আপিল আবেদন পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়।

সে অনুসারে হাইকোর্টে ওই আপিল দু’টির পুনরায় শুনানি হয়।