এরদোয়ানের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ফ্রান্স, রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়েছে ফ্রান্স।

ধর্মনিরপেক্ষ ফরাসি মূল্যবোধ সুরক্ষিত রাখা এবং মৌলবাদী ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন ম্যাক্রোঁ। আর এ কারণে তার ‘মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা দরকার’বলে মন্তব্য করে বসেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

ফ্রান্সে এক শিক্ষক ক্লাসে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন দেখানোয় হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ দেখা দেওয়ার পর ম্যাক্রোঁ মৌলবাদী ইসলামের বিপরীতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা নিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেন।

বিবিসি জানায়, ‘ফ্রান্স ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন বন্ধ করবে না’ বলেও এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার অর্থ তার কথায়, দেশের একতাকেই ক্ষুন্ন করা।

এমনকী গোটা বিশ্বে ইসলামকে ‘সংকটাপন্ন’ একটি ধর্ম বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ। মসজিদগুলোতে বিদেশি তহবিল সাহায্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বলেছেন তিনি।

তার এইসব কথার পরিপ্রেক্ষিতেই তুর্কি শহর কেইসারিতে এক ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, মুসলিম এবং ইসলাম নিয়ে ম্যাক্রোঁর সমস্যা কি? তার মানসিক চিকিৎসা দরকার।

‘একটা দেশের প্রধানকে কী বলা যেতে পারে, যিনি ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা বোঝেন না এবং তার দেশের ভিন্ন ভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে এমনতর আচরণ করেন।’

এরদোয়ানের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্স তুরস্কে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য ফরিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর এক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। বাড়াবাড়ি এবং রূঢ় আচরণ কোনও তরিকা হতে পারে না। আমরা চাই এরদোয়ান তার নীতি পরিবর্তন করুন, কারণ এটি সবদিক থেকেই বিপজ্জনক।

এরদোয়ান একজন ধার্মিক মুসলিম। ২০০২ সালে তার ইসলাম-ভিত্তিক একে পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি তুরস্কের মূলধারার রাজনীতিতে ইসলামকে নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।