শ্রমিক কর্মবিরতি: বহির্নোঙরে পণ্য খালাস, নদীপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস এবং নদীপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। দেড় হাজারের বেশি লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকার, বাল্ক হেড অপেক্ষমাণ আছে কর্ণফুলী নদীতে।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবী আলম বাংলানিউজকে বলেন, মধ্যরাত থেকে আমাদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। বহির্নোঙরে অর্ধশতাধিক বড় জাহাজ রয়েছে। নদীপথে পণ্যবাহী কোনো নৌযান চলাচল করছে না। কিছু লাইটার জাহাজ চলাচল বা পণ্যখালাসের চেষ্টা করলেও আশপাশের লাইটার জাহাজের শ্রমিকরা জোর করে কাজ বন্ধ করে দেন। কর্ণফুলী নদীসহ বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে অলস বসে আছে লাইটার, ট্যাংকার, বাল্ক হেডগুলো। শুধু যাত্রীবাহী নৌযান কর্মবিরতির বাইরে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন বলেন, সোমবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আমাদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত আমরা সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, জাহাজ মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন ঢাকায় ত্রিপাক্ষিক আলোচনা করেছি। সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকাল চলবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বহির্নোঙরে লাইটার জাহাজ চলাচল না করলেও বন্দরের মূল জেটি জিসিবি, সিসিটি, এনসিটি, রিভারমুরিং, ডলফিন অয়েল জেটি ও স্পেশাল বার্থে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং এবং বন্দর থেকে লরি, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানে পণ্য ও কনটেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক রয়েছে।

ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন লাইটার জাহাজগুলো ডব্লিউটিসি থেকে সিরিয়াল নিলেও মঙ্গলবার কর্মবিরতির কারণে কোনো বুকিং নেই।

সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে গম, ভুট্টা, ডাল, সার, চিনি, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, কয়লা, ভোজ্যতেল ইত্যাদি খোলাপণ্য বড় কার্গো জাহাজে আমদানি করা হয়। কর্ণফুলী নদীর ড্রাফট কম থাকায় এসব বড় জাহাজ সরাসরি জেটিতে ভিড়তে পারে না। তাই বহির্নোঙরে (সাগরে) অপেক্ষমাণ রেখে ছোট ছোট জাহাজে (লাইটার, ট্যাংকার) খালাস করে নদীপথে বিভিন্ন নদীবন্দর ও শিল্পকারখানার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন শিল্পকারখানার কাঁচামাল পরিবহন কার্যত বন্ধ রয়েছে। এতে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন, সাপ্লাই চেন স্বাভাবিক রাখা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে আমদানিকারক ও শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে।