এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া লাপাত্তা

সিলেটের নগর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ আলোচিত উপ পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া লাপাত্তা হওয়ার আগে শেষ কথা হয়েছিল গত রোববার (১১ অক্টোবর) বিকেলে তার ছোট ভাই আরিফ হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে।

পরিবারের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে কয়েক মিনিট ফোনালাপ হয়। ফোনে তার ভাইকে বলে, আমাদের ফাঁড়িতে একটু ঝামেলা হইছে। একটা লোক মারা গেছে। আমি অনেক বিপদে পড়ে গেছি। যেকোনো মুহূর্তে সাসপেন্ড হতে পারি। সবাইকে বল আমার জন্য দোয়া করতে।

আকবর হোসেনের মা বলেন, আমার ছেলের টাকায় বাড়ি করা হয়নি। আমার স্বামীর পেনশনের টাকা আরেক ছেলে প্রবাসে থাকে দুজনের মিলিত টাকায় বাড়িটি করা হয়েছে। সবাই এখন আমাদের নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করছে। আমার ছেলে এ ধরনের কাছ করতে পারে না।

সিলেট বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এক সদস্য বলেন, গত রোববার (১১ অক্টোবর) রায়হান উদ্দিন নিহত হন। ঘটনার পর সকাল ৮টায় ফাঁড়িতে
আসেন এসআই আকবর। কিছুক্ষণ থাকার পর বেরিয়ে যান। এরপর তাকে আর দেখা যায়নি।

যদিও সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতিময় সরকার  বলেন, ঘটনার পর এসআই আকবরসহ বরখাস্ত ৪ জন ও প্রত্যাহারকৃত ৩ জনই পুলিশ লাইনে সংযুক্ত আছেন।

কিন্তু বাস্তবে ঘটনার পর থেকে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া পলাতক থাকার বিষয়টি পুলিশ লাইন সূত্রও নিশ্চিত করেছে।

এছাড়া সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়াও এসআই আকবরের পলাতক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনা যা শুনেছেন তাই। সে পালিয়ে গেছে।

রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার তিন মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন।

গত রোববার (১১ অক্টোবর) রায়হান উদ্দিন নিহত হন। পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের অভিযোগে নগরীর কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান মারা যান। কিন্তু নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান নিহত হন। মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার হাতের নখও উপড়ানো ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যার অভিযোগ এনে নিহতের স্ত্রী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সোমবার (১২ অক্টোবর) এ অভিযোগে পুলিশের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির সুপারিশে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।