মায়ের পর মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু, পিতা পলাতক

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামে মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ৫ বছরের মাথায় ৯ বছর বয়সী মেয়ের রহসজনক মৃত্যু হয়েছে। বোয়ালখালীতে তড়িগড়ি করে দাহ সম্পন্ন করায় স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাঙামাটি থেকে শিশুটির লাশ সিএনজি চালিত অটোরকিশা করে বোয়ালখালীতে নিয়ে আসে শিশুটির পিতা এবং পারিবারিক শ্মশানে শিশুটির দাহ সম্পন্ন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে মৃত্যুর কারণ কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। দাহ শেষ করার পরপরই শিশুটির পিতা পালিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ৯নং ওর্য়াডের দেওয়ানজীর বাড়ির বাবলু দেওয়ানজী টাবলুর মেয়ে মনি দেওয়ানজী প্রিয়ন্তি (৯) পিতার সাথে রাঙামাটি জেলার কাউখালী ঘাগড়া বাজার এলাকায় থাকতো। সেখানেই প্রিয়ন্তি বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়েছে দাবি করেছেন নিহতের চাচা প্রিয়তোষ দেওয়ানজী ও টিটু দেওয়ানজী।
এর আগে গত ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর বুধবার প্রিয়ন্তির মা টকি দে(২৮) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত টকির মা লক্ষ্মী দে বাদী হয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে রাউজান থানায় হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় স্বামী বাবলু দেওয়ানজী টাবলু গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাদের সংসারে প্রেমা দেওয়ানজী ও মনি দেওয়ানজী প্রিয়ন্তি নামের দুই মেয়ে রয়েছে। পরবর্তী বাবলু দেওয়ানজী আবারো বিয়ে করেন। প্রিয়ন্তি দেওয়ানজী পিতা ও সৎ মায়ের সাথে রাঙামাটি জেলার কাউখালীতে বসবাস করছিলো। এরমধ্যে সৎ মায়ের সংসারে আরো একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর নানান অশান্তির সৃষ্টি হলে প্রেমা বোয়ালখালীতে ঠাকুরমায়ের কাছে চলে আসে এবং স্থানীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।
নিহতের নানী লক্ষ্মী দে জানান, আমার মেয়েকে প্রায় সময় মারধর করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো বাবলু। অনেকবার চিকিৎসাও করিয়েছি। এর এক পর্যায়ে সে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর ৫বছরের মাথায় গত শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে নাতনী প্রিয়ন্তির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তারা তাকেও হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছি।
স্থানীয় কধুরখীল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শংকর চন্দ বলেন, এটি মর্মান্তিক ঘটনা। শিশুটির মা ৫ বছর আগে একই তারিখে মারা গিয়েছিল। এর ৫বছরের মাথায় শিশুটিও মারা গেল। স্থানীয়ররা এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য অভিযোগ করছেন। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে শিশুটির নানীকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়া ওইদিন বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফোনে দাহকার্য সম্পন্ন করার জন্য বললে সে অনুযায়ী দাহ সম্পন্ন করা হয়। তবে এরপর থেকে শিশুটির পিতা পলাতক রয়েছে।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কেউ কোনো অভিযোগ দেননি।’