পরকীয়ায় উভয়েরই সমান শাস্তি চেয়ে হাইকোর্টে রিট

নিউজ ডেস্ক: পরকীয়ায় উভয়েরই সমান শাস্তি চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।

এতোদিন বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা অনুয়ায়ী পরকীয়া/ব্যাভিচারে অপরাধে শাস্তি দেওয়া হতো। রিটে ওই ধারার বাতিল বা সংশোধনী চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বলা হয়, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ছাড়া যৌনসঙ্গম করেন এবং অনুরূপ যৌনসঙ্গম যদি ধর্ষণের অপরাধ না হয়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবে। যার শাস্তি অনধিক ৫ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ উভয় দণ্ড। কিন্তু এক্ষেত্রে একইভাবে ওই অপরাধে জড়িত নারীকে দুষ্কর্মের সহায়তাকারি হিসেবে দেখা হলেও, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উপযুক্ত বলে গণ্য করা হয়নি।

রিটে ৪৯৭ ধারা কেন অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জিও জানানো হয়। পাশাপাশি ধারাটি সংশোধনের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। এতে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন সচিব ও লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং বিভাগের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারি আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী কোন স্ত্রী পরকীয়া করলে যার সঙ্গে পরকীয়া করবে শুধু সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রয়েছে। অথচ স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর কিছুই করার নেই। একইভাবে স্বামী পরকীয়া করলে স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলেও বা যার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত, তার বিরুদ্ধে কিছুই করা যায় না।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আবার স্বামী যদি কোনো বিধবা বা অবিবাহিত মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে পরকীয়ায় জড়িত হয় তা আইনত বৈধ! এই আইনটি সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এটা অদ্ভূত ও বৈষম্যমূলক আইন।’

‘এছাড়া এ আইনটি বৃটিশ আইন থেকে নেওয়া হয়েছে অথচ সেখানে সেটি বহু আগেই বাতিল হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেই প্রায় পৌনে ২০০ বছরের পুরানো আইনটি এখনো রয়েছে গেছে। এ কারণে আইনটি বাতিল বা সংশোধনী চাওয়া হয়েছে’, যোগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, একই বিষয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টম্বর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তাদের ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় ঘোষণা করে। এরপরই বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। এটি ১৯৬০ সালের আইন।