বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল-মোটেল ৫ মাস পর খুলছে

দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে শুত্রুবার থেকে শর্ত সাপেক্ষে পর্যটকদের জন্য বান্দরবানে খুলে দেয়া হচ্ছে হোটেল মোটেল রিসোর্টসহ সব পর্যটন কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানাগেছে, করোনা সংক্রমনের কারনে গত ১৮ মার্চ থেকে বান্দরবানের পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বন্ধ করে দেয়া হয় সব আবাসিক হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউসসহ সব পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ দিন পর পর্যটন কেন্দ্রসহ হোটেল মোটেল খুলে দেয়ায় খুশি জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। এর আগে গত ১৭ই আগস্ট খুলে দেয়ার কথা থাকলেও করোনা সংক্রমনের কারনে আবারো তারিখ পরিবর্তন করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে ২১শে আগস্ট শুত্রুবার থেকে জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র হোটেল মোটেল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

জেলা প্রশাসন জানায়, ২১ আগস্ট থেকে জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস গুলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা এসব পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমন করতে পারবে। এক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
করোনা সংক্রন প্রতিরোধে মার্চ মাস থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় জেলার সব আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস পরিবহন ও পর্যটন কেন্দ্র। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ঠ কয়েক হাজার মানুষ। ব্যবসায়ীসহ পর্যটন খাতে লোকসান হয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা। পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ছোট বড় শতাধিক আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক। জেলায় পর্যটকদের জন্য রয়েছে ৩ শতাধিক চাঁদের গাড়ী।

এসব পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ রয়েছে ৫ শতাধিক শ্রমিক। লকডাউনের কারনে দীর্ঘ ৫ মাস তারা বেকার জীবন যাপন করেছে। অনেকে জীবীকার তাগিদে অন্য পেশায় চলে গেছে। পরিবহন শ্রমিক নেতা কামাল উদ্দিন বলেন, করোনায় লক-ডাউনের কারনে পর্যটন কেন্দ্র হোটেল মোটেল বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা সম্পূর্ন বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকে অন্য পেশায় চলে গেছে। পর্যটন নগরী হওয়ায় বন্ধের সময় বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসে। কিন্তু পর্যটন স্পট বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসতে পারছে না। আর পর্যটক না আসলে আমাদেও গাড়ী বন্ধ থাকে। তাই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় আমরা খুশি। এখন পর্যটক আসবে। আমাদের পরিবহন সচল হবে। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন হোটেল মালিকরাও। পরিচর্যার অভাবে নস্ট হয়ে গেছে হোটেল রিসোর্টের অনেক জিনিস।

ফানুস রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দীন ও স্বর্ণশিলার পরিচালক মানিক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকায় কর্মচারীও বিদায় করে দিয়েছি। এতে সঠিক পরিচর্যার অভাবে হোটেলের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আবার নতুন করে কিনতে হচ্ছে। প্রতি বছর বন্ধের সময় বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক আসে। কিন্তু দুই ঈদে লকডাউন থাকার কারনে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসতে পারেনি। হোটেল মোটেল বন্ধ থাকায় আমাদেরকে লোকসান গুনতে হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। আশা করি আবারো পর্যটক আসবে, আমরাও ব্যবসা করতে পারব।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামীম হোসেন বলেন, কিছু শর্ত সাপেক্ষে শুত্রুবার থেকে পর্যটকদের জন্য পর্যটন কেন্দ্রসহ জেলার সব হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস গুলো খুলে দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যটকরা পর্যটন কেন্দ্র গুলো ভ্রমন করতে পারবে।