‘শিক্ষার্থী ঝড়েপড়া রোধে স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন বলেছেন শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া রোধ ও মানস্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে স্কুল পর্যায়ের দেশের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবার বা টিফিন ব্যবস্থার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার ।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে শেরশাহ কলোনী ডাক্তার মজহারুল হক হাই স্কুলে বিনামুল্যে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে একথা বলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহেদ ইকবাল বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, সাবেক কমিশনার ফরিদ আহমদ চৌধুরী, নাজিম উদ্দীন,ফজল করিম,আবু তাহের প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মেয়র বলেন, মানব সম্পদ উন্নয়নে এযাবৎকালে সরকার কর্তৃক যে সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মসুচি গ্রহন করেছে তারমধ্যে উপবৃত্তি প্রদান অন্যতম। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে এই উপবৃত্তি কর্মসুচি চালু করে। এর ফলে দেশের মোট জনগোষ্ঠির প্রায় অর্ধেক নারী যারা দারিদ্র,বাল্যবিবাহ,আর্থ-সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা,ধর্মীয় গোঁড়ামী ইত্যাদির কারণে শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত ছিল, তারাই সরাসরি শিক্ষালাভে সুযোগ পেয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, এই উপবৃত্তির টাকা যাতে যথাযথ পৌঁছে যায় সেলক্ষে সরকার বিনা পয়সায় ২০লক্ষ মোবাইল ফোন সরবাহ করে। সম্পুর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং বা বিকাশ বা অন্য কোনো সহজ পদ্ধতিতে সরাসরি যোগ্য শিক্ষাথীদের মাঝে এই উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন অর্থের অভাবে কারও লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়ে যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় সরকার । এমনকি যে পর্যন্ত শতভাগ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে না দেশ,ততদিন পর্যন্ত এ প্রকল্পটি চলমান থাকবে বলে মেয়র দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন আমরা একসময় গরীব ছিলাম। বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়া লেখা করার চেয়ে জীবন জীবিকার জন্য কাজে নিয়োজিত থাকাই আমাদের পছন্দ ছিল বেশী। শিক্ষা সুদুর প্রসারী ফলাফল সম্পর্কে তাদের ধারণাও একবারেই কম।তাই দেশে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীর হার ছিল খুব কম । এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বর্তমান সরকার নানামুখি পদক্ষেপ করেছে। বই বিতরণ,বিনাবেতনে শিক্ষা,বাল্যবিবাহ রোধ প্রভৃতি কারণে স্কুলগামী ছেলেমেয়ের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি শিক্ষার হারও প্রতিবছর বেড়েই চলেছে।তাই নয়, এই কর্মসুচি বাস্তবায়নের ফলে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বেড়েছে এবং ঝরে পড়ার হার কমেছে। এমতাবস্থায় ২০০৮ সালে দেশের সাক্ষরতা হার ছিল ২৬ দশমিক ২৪ শতাংশ । আর এ হার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে মেয়র উল্লেখকরেন। তিনি বলেন সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ, সভ্যজাতি ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। সু-শিক্ষায় শিক্ষিত সুনাগরিক গড়ার কারিগর হলেন শিক্ষক। সুনাগরিক গড়তে শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিসীম। কোমলমতি শিশু কিশোরদের সঠিক পদ্ধতিতে উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকগণ। শিক্ষককে হতে হবে সৎ, চরিত্রবান, দায়িত্বশীল এবং শিক্ষাদানে যতœশীল । শিক্ষকতা শুধু একটি চাকুরী নয়, সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে প্রকৌশলী বা কারিগরের ভূমিকা পালনে আহবান জানান মেয়র । পরে মেয়র শিক্ষার্থীদের হাতে সরকার প্রদত্ত বিনা মুল্যে বই তলে দেন।