রাখাইনে মানবিক স্বাস্থ্য সেবা এখনো রুদ্ধ: এমএসএফ

     

    কক্সবাজারের কুতুপালং শরনার্থী শিবিরে এমএসএফে’র চিকিৎসা কেন্দ্রে রোহিঙ্গারা চিকিৎসা নিচ্ছে- ছবি এমএসএফ

    মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন প্রদেশে এখনো স্বাধীন ও মানবিক সংস্থার প্রবেশ এখনো রুদ্ধ বলে জানিয়েছে সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল মেডিসিন সান ফ্রন্টিয়ার্স এমএসএফ। শুক্রবার আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডের আমস্টাডাম থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে। স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি না থাকায় রাখাইন প্রদেশে ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাসহ অন্য জনগোষ্টির কাছে চিকিৎসাসহ অন্য মানবিক সহায়তা পৌছানো যাচ্ছেনা বলেও বিবুতিতে বলা হয়েছে।

    এমএসএফের মিয়ানমারের অপারেশান ম্যানেজার বেনোয়া দ্যা গ্রিজ জানান, স্বাধীনভাবে পরিস্থিতি মুল্যায়নের সুযোগ না থাকায় কেউ জানাতে পারছেনা সেখানে মানবিক সহায়তা ও চিকিৎসা সেবার চাহিদা কতটুকু।

    মিয়ানমার সরকারের কাছে এমএসএফ  সেখানে বঞ্চিতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পৌছানো ও যাতায়তের অনুমতি চেয়ে বারবার আবেদন করলেও এখনো কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখনো তা অসম্ভব।

    এমএসএফ আবারো মিয়ানমার সরকারকে আহবান জানাচ্ছে রাখাইন প্রদেশে সকল স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মানবিক সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য যাতে সাধারন মানুষের চিকিৎসা চাহিদা নিরুপনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করা যায়।

    গত বছর ২৫ আগষ্ট পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন অর্মি আরসার হামলার প্রেক্ষিতে সেখানে রোহিঙ্গাদের উপর দমন পীড়ন শুরু হয়। যার জের ধরে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

    বর্তমানে রাখাইন প্রদেশে সাড়ে পাচ লাখ থেকে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তারা কঠোর বিধি নিষেধের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। এসব রোহিঙ্গারা স্বাধীনভাবে চলা ফেরা করতে পারেনা। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য স্কুল ও হাসপাতালে যেতে পারেনা।

    কুতুপালং ক্যাম্পে খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমান রোহিঙ্গা শরনার্থীরা

    সেখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গা ও রাখাইনদের স্বাস্থ্য চাহিদা নিরুপন জরুরী বলেও মনে করছে এমএসএফ।

    এমএসএফ ১৯৯৪ সাল থেকে রাখাইন প্রদেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠিকে  চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। ২০১৭সালের ১১ আগষ্ট সেখানে এমএসএফের কাযক্রম বন্ধ হয়ে যায়।  তখন সেখানে এমএসএফ চারটি ক্লিনিক পরিচালনা করতো। এসব ক্লিনিকে মাসে ১১হাজার মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো। অবশ্য চারটি ক্লিনিকের তিনটি ইতোমধ্যে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। চিকিৎসা সেবা দিতে না পারলেও রাখাইনের মংডু শহরে এখনো এমএসএফর কর্মীরা অবস্থান করছে।

    বিবৃতিতে এমএসএফ বলেছে, মংডুতে অবস্থানরত তাদের কর্মীরা স্থানীয় রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সংকট মারাত্মক বলে খবর পাঠিয়েছে। কোন কোন রোহিঙ্গা ইয়াংগুন কিংবা সিটুয়ে যেতে না পেরে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে আসছে।

    যদিও মিয়ানমার সরকার বলছে, সেখানে বসবাসরতদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।কিন্তু মানবিক সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকারে তীব্র প্রতিবন্ধকতা থাকায় পরিস্থিতি সম্পর্কে নিরপেক্ষ ধারনা পাওয়া যায়না বলেও বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে।