বাহরুল উলুম হযরত মৌলানা মুহাম্মদ কুতুব উদ্দীন (ম.জি.আ) স্মরণে

মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দীন:: দ্বৈত শতাব্দীর ইলসামী রেনেসাঁর প্রানপুরুষ সদ্য প্রয়াত বায়তুশ শরফ দরবারের সম্মানিত পীর সাহেব কেবলা, আমাদের পরম শ্রদ্ধাভাজন রুহানী ওস্তাদ, বাহরুল উলুম আল্লামা আলহাজ্ব হযরত মৌলানা মুহাম্মদ কুতুব উদ্দীন সাহেব(ম.জি.আ) ছিলেন একজন মানবিক ও বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার অগ্রপ্রতীক।

তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানবিকতার তুমুল চর্চা করেছিলেন নিজ দরবারের স্বকীয়তা বজায় এবং আপন পীরদ্বয় হযরত কেবলা মীর মুহাম্মদ আখতার রাহ্ ও হুজুর কেবলা শাহ্ছুপি শাহ্ মওলানা আব্দুল জব্বার রাহ্ কে শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে অনুসরন ও অনুকরন করে। ।তিনি আল্লাহ ও আল্লাহ্ রসুল হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ধর্মীয় অকাট্য দলিলগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন হিংসা ও বিদ্বেষ বিহীন। তিনি একজন মুসলিম ওম্মার রাহাবার হলেও, তিনি ছিলেন সকলের কাছে শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিদের অন্যতম ও সমাদৃত ব্যক্তিত্ব।শিশুকাল হতে তিনি ছিলেন প্রকঢ় মেধার অধিকারী ও কৃতিত্বপূর্ণ উদাহরন। যার স্বাক্ষর পরিলক্ষিত হয়েছে তাঁর
বয়োবৃদ্ধ অবস্থায় কুরআন ও সুন্নার যুগোপযোগী অনুশীলনের মাধ্যমে। তারই ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রেখে মৃত্যুশয্যায়ও তিনি শয়ন মাবুদকে জিকিরের মাধ্যমে স্মরণ করতে ভুলে যাননি। মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে তিনি ছিলেন গুনাহ মাপের কেন্দ্রবৃন্দু। বিশেষকরে শবে মেরাজ, শবে বরাত ও শবে কদরে স্রষ্টার
আলিশান দরবারে তাঁর মোনাজাত ও ফরিয়াত যেন শত মুরিদের মনের অব্যক্ত কথাগুলো পাপমোচনের জন্য উপস্থাপন করেন। একাধিক যেমনঃ বাংলা, আরবি,উর্দু ও ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় মোনাজাত করে ভাষার নৈপুন্যতা,মাধুর্য ও শিশুসুলভ সাবলিল কন্ঠস্বর মানুষের চোখের পানি ঝরিয়েছে প্রবাহিত স্রোতের ন্যায়। রবিউল আউয়াল মাসের আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে তিনি মিলাত ও সিরাতকে একাকার করে বয়ান করতেন রাসূলে পাক (সঃ) এর জীবন ও দর্শন সম্পর্কে।
মানুষের মনের পালর্স সম্পর্কে সম্যক ধারনা আছে বলেই লাখো ভক্ত উক্ত মহিমানন্বিত রজনীগুলোতে বায়তুশ শরফ দরবারে হাজিরা দিতে চলে আসতেন দূর-দুরান্ত হতে। একই সাথে তাহাজ্জুদ গুজারের ফলে চলে যেতেন সৃষ্টিকর্তার খুব সন্নিকটে। যখন ইসলামের বিকৃত ফুলবুলি দিয়ে অন্যধর্মের মানুষকে ইসলাম হতে বিমুখ করা হচ্ছে ঠিক তখুনি তিনি ইসলামের সঠিক ইতিহাস,ঐতিহ্য ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সৌন্দর্য্য উপস্থাপন করে অনেক অমুসলিমকে তাঁর হাতে বায়াত করে মুসলিম করেছেন।
এত উচ্চ শিখরে অবস্থান করেও বিন্দুমাত্র আমিত্ব স্পর্শ করতে পারেননি বরং তাঁর বিনয়ী স্বভাব ও মনোমুগ্ধকর নিষ্পাপ চেহারা যে কাউকে আকৃষ্ট করেছে মুহূর্তের মধ্যেই। যার চেহারার দিকে তাকালেই মনে পড়ে ইসলামি সোনালি দিনের ড্যাফোডিল।
এক কথাই তিনি ছিলেন আল্লাহ্ প্রদত্ত সিরাতুল মোসতাকিনের দ্বৈত শতাব্দীর অন্যতম ধারক ও বাহকের রাহাবার।