বুনো শুয়োরের জন্য রাখা বিস্ফোরক খেয়েছিল অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি?

ভারতের কেরালায় বিস্ফোরক ঠাসা আনারস খেয়ে গর্ভবতী হাতির মর্মান্তিক মৃত্যুর তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। হাতিকে খাওয়ার জন্য নয়, মূলত বুনো শুয়োরকে হত্যা করতেই আনারসে বিস্ফোরক ভরে রাখা হয়েছিল বলে বন বিভাগের তদন্তে উঠে এসেছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, কেরালার এক বন কর্মকর্তা বলেছেন- বুনো শুয়োর বা ওই জাতীয় প্রাণীকে মারার জন্য অনেক সময়ে জঙ্গলে বসবাস করা মানুষ বিস্ফোরক বা দেশি বোমা ব্যবহার করেন। তাদের অনুমান ভুল করে হয়তো সেটিই খেয়ে ফেলেছিল মৃত হাতিটি।

তবে কোথায় এই ঘটনা ঘটেছিল সেটার কোন কূল-কিনারা এখনো করতে পারেননি বন বিভাগের তদন্ত দল। কেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তারা। মান্নারকড় ফরেস্ট ডিভিশনের প্রধান কর্মকর্তা কে কে সুনীল কুমার বলেছেন, ‘হাতিটি কোথায় এই বিস্ফোরক ঠাসা আনারস খেয়েছিল তা সুনির্দিষ্ট করে বলা অত্যন্ত মুশকিল। একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি দিনে গড়ে ১০০ কিলোমিটার হাঁটতে পারে। হাতিটিকে যেখানে প্রথম আহত অবস্থায় দেখা গিয়েছিল সেখান থেকে কতদূরে তা ঘটেছিল তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।’

পশ্চিমঘাট রেঞ্জের ফরেস্ট অফিসাররা জানাচ্ছেন, ‘২৩ মে প্রথম তারা জানতে পারেন মান্নারকড় রেঞ্জের পোট্টিয়ারার কাছে একটি হাতি এসেছে। পৌঁছে দেখা যায় হাতির মুখ রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত। ২৫ মে একটি নদীতে দেখা যায় হাতিটিকে। পশু চিকিৎসকদের বক্তব্য, জ্বালাপোড়া সহ্য করতে না পেরেই হয়তো পানির মধ্যে ঠায় দাঁড়িয়েছিল হাতিটি।’

তখনো হাতির বিস্ফোরক খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি। মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তেই জানা যায়, বারুদ ঠাসা আনারস খাওয়ার বিষয়টি। সেইসঙ্গে এও জানা যায়, হাতিটি মা হতে চলেছিল। কেরালার বন কর্মকর্তাদের দাবি, হাতিটি জীবিত থাকা অবস্থাতেই কুনকি (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) হাতি ব্যবহার করা হয় কোথা থেকে সে এসেছে তা বোঝার জন্য। কিন্তু, হাতিটির আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে তাকে বেশিদূর নড়ানো যায়নি।

হাতি হত্যায় এরই মধ্যে বন্যপ্রাণী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন গতকাল আশ্বাস দিয়েছেন, যারা এই অমানবিক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।

সূত্র- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।