হারের নেপথ্যে ফুটবলারদের ক্লান্তি, রেফারির পক্ষপাতদুষ্টতা: ব্রুজন

ম্যাচের আগের দিন অস্কার ব্রুজন বলেছিলেন, ‘টুর্নামেন্টের সেরা আক্রমণভাগ মালদ্বীপের। তবে তাদের গোল করতে হবে আসরের সেরা রক্ষণের বিপক্ষে।’ কোচের কথার ওজন কতটুকু রক্ষা করতে পেরেছেন তারিক কাজী, তপু বর্মণরা? সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মালদ্বীপ। তবে কি ব্রুজনের কথা মিথ্যা প্রমাণিত হলো? না, দুর্বল ডিফেন্স নয়; বরং ঠাসা সূচিতে ক্লান্ত বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। এমনটাই দাবি জামাল ভূঁইয়াদের নতুন কোচ ব্রুজনের। সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন ম্যাচ রেফারির নিরপেক্ষতা নিয়েও!
গত ১লা অক্টোবর শুরু হয়েছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসর। সাত দিনে মোট ৩টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ব্যস্ততম সূচিতে খেলোয়াড়দের ক্লান্ত হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে না পড়লে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারতো বলে ধারণা অস্কার ব্রুজনের।
সংবাদসম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘সাত দিনে আমরা তিনটি ম্যাচ খেলেছি। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে শক্তি হারিয়েছি। ছেলেরা স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারেনি।’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সে ম্যাচে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়লেও বিরতির পর আক্রমণে ধার বাড়িয়ে ম্যাচে ফেরে ইয়াসিন আরাফাতরা। কিন্তু মালদ্বীপের বিপক্ষে বল দখলে গত দুই ম্যাচের তুলনায় পিছিয়ে ছিল জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন দল। প্রতিপক্ষের রক্ষণে এসে খেই হারিয়েছে বারবার। ব্রুজন বলেন, ‘প্রথম ৫০ মিনিট… আমি আসলেই মনে করি ম্যাচটি ফিফটি-ফিফটি ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তাদের পাল্টা জবাব দেয়ার উপায় আমার জানা ছিল না। আমি ফরমেশন পরিবর্তন করেছিলাম, তবে তাতেও আক্রমণে কোনো লাভ হয়নি।’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর কিছুদিন আগেই জেমি ডে’র জায়গা পান ব্রুজন। প্রস্তুতি এবং ম্যাচ খেলতেই সময় পার হয়েছেচ তার। ফুরসত মিলেছে কমই। ব্রুজন বলেন, ‘বাংলাদেশে এক সপ্তাহ প্রস্তুতি নিয়ে আমরা মালদ্বীপে এসেছিলাম, এখানে এসেও প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, ম্যাচ খেলতে হয়েছে। গত ১৪ দিনে আমরা দেড় দিনও বিশ্রাম পাইনি। বলতে পারি, অনুশীলনে ছেলেদের এনার্জি আগের মতো ছিল না। ক্লান্ত ও অবসন্ন ছিল তারা।’
ব্রুজন বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা পর পর আমাদের একটা করে ম্যাচ খেলতে হয়েছে। আমাদের পরের ম্যাচ নেপালের বিপক্ষে। সে ম্যাচে আমরা সতেজ হয়ে ফিরব। নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে যথেষ্ট সময় পাবো। এখনও আমাদের সুযোগ আছে ফাইনাল খেলার।’
আগামী ১৩ই অক্টোবর রাউন্ড রবিন লীগে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
গোটা ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩০টি ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন ম্যাচ রেফারি ইউসুফ সাঈদ হাসান। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি হলুদ কার্ড। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কার্ড দেখানো হয়েছে কোচ ব্রুজনকেও। অপরদিকে মালদ্বীপের বিপক্ষে রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন ৭ বার। যাতে ইরাকের এই রেফারির পক্ষপাতদুষ্টতা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন ব্রুজন। তিনি বলেন, ‘রেফারি প্রথম মিনিট থেকেই পক্ষপাতী ছিল। এই রেফারিকে টুর্নামেন্টে নিষিদ্ধ করা দরকার। আমাদের হারের কারণ রেফারিং। তবে এটা মূল কারণ নয়।’
রেফারিকে কাঠগড়ায় তুললেও স্বাগতিক দলের প্রশংসা করতে ভোলেননি ব্রুজন। তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপকে অভিনন্দন। তারা আজ আমাদের চেয়ে ভালো ছিল। আমাদের কোনোকিছুই কাজ করেনি। আমি ভেবেছিলাম ছেলেরা ৯০ মিনিট লড়াই করবে। কিন্তু দুই দলের মূল পার্থক্য এনার্জি। এ দিকটায় মালদ্বীপ আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল।’