আট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নদীতে পানি বাড়ায় ইতোমধ্যে দেশের আট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

একইসঙ্গে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বন্যা প্রবণ নদ ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে। আশঙ্কা রয়েছে এই নদের অববাহিকাও প্লাবিত হওয়ার।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মার পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, গঙ্গা ও সুরমা-কুশিয়ারার পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা সোমবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া স্থিতিশীল হতে পারে তিস্তা নদীর পানির সমতল।

এ অবস্থায় সোমবারের (২৩ আগস্ট) মধ্যে কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এ সময়ে যমুনা নদী সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এছাড়া পরবর্তী দশদিনের মধ্যমেয়াদী এক পূর্বাভাসে পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদ স্টেশন, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি স্টেশন, সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর স্টেশনে পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। মানিকগঞ্জের আরিচা স্টেশন, সিরাজগঞ্জের সিরাজগঞ্জ স্টেশন এবং টাঙ্গাইলের এলাসিন ঘাট স্টেশনেও পানির সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। ইতোমধ্যে এসব স্থানের কোথাও কোথাও পানির সমতল বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে।

গঙ্গা নদীর পানির সমতল আগামী ৫ দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্ট ও শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে পানির সমতল আগামী ৭ দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে, যার ফলে চলমান বন্যা পরিস্থিতি আগামী ৭দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

এছাড়া মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল এবং মাওয়া পয়েন্টে পানি সমতল ২৫ আগস্ট নাগাদ বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। তবে, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে পানি সমতল বাড়লেও বিপৎসীমা অতিক্রমের ভয় নেই।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, এখন পাঁচটি নদীর পানি ৮ স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে ধরলার পানি কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনার পানি ১ সেন্টিমিটার, পাবনার মথুরায় ১২ সেন্টিমিটার, মুন্সিগঞ্জের আরিচায় ২ সেন্টিমিটার, আত্রাইয়ের পানি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ৯ সেন্টিমিটার, পদ্মার পানি রাজবাড়ির গোয়ালন্দে ৪৯ সেন্টিমিটার ও শরীয়তপুরের সুরেশ্বরে ৮ সেন্টিমিটার এবং গড়াই নদীর পানি কুষ্টিয়ার কামারখালি স্টেশনে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানিয়েছে, তাদের পর্যবেক্ষণাধীন বিভিন্ন নদ-নদীর ১০৯ স্টেশনের মধ্যে রোববার (২২ আগস্ট) পানির সমতল বেড়েছে ৫৮টিতে, কমেছে ৪৫টিতে। আর ছয়টি স্টেশনে পানির সমতল অপরিবর্তিত আছে এবং একটির তথ্য সংগ্রহ এখনও শুরু হয়নি। এছাড়া বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আটটি স্টেশনে পানির সমতল।