সেনা প্যারেডে নারীদের পায়ে হাই-হিল, যৌনতার অভিযোগ

ইউক্রেনে নারী সেনা সদস্যদের বেশ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এতে তাদেরকে হাই-হিল পরে মার্চপাস্ট করতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনীর মতো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে নারীদের হাই-হিল পরানোর এই নীতি নিয়ে এরই মধ্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই বিতর্ক দেশটির পার্লামেন্ট পর্যন্ত গিয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, যুবতী সেনা সদস্যদেরকে আবেদনময়ী দেখানোর জন্য এ ধরনের জুতা পরানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাদেরকে যৌনভাবে হেনস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। মিডিয়ায় এমন ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদগুলোর দায়িত্বরতদের ভ্রু উত্থিত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইস সংস্করণ।

উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন হয় ইউক্রেন।

সেই স্বাধীনতা অর্জনের ৩০ বছর পূর্তি আগামী মাসে। তা পালনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। এ জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে সেনা সদস্যদের। তার মধ্যে আছেন যুবতীরাও। তাদেরকে হাই-হিল পরিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া নিয়ে কথা উঠেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যভিত্তিক সাইট আরমিয়াইনফর্মে ক্যাডেট ইভানা মেদিভিদ বলেছেন, এটাই প্রথম হিল পরে সেনাবাহিনীতে প্রশিক্ষণ। সেনাবাহিনীর জন্য নির্ধারিত যে বুট, তার চেয়ে এই হিল পরে প্রশিক্ষণ চালানো অনেকটা কঠিন।

যুবতী সেনাদেরকে এমন হিল পরিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া নিয়ে মস্করা করা হচ্ছে, সমালোচনা করা হচ্ছে অনলাইনে এবং বিতর্ক হচ্ছে পার্লামেন্টে। সেখানে অভিযোগ করা হচ্ছে, হিল পরিয়ে এসব যুবতী সেনার যৌনতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভাষ্যকার ভিতালি পোর্টনিকোভ ফেসবুকের পোস্টে সমালোচনা করেছেন যে, হিল পরিয়ে এই প্রশিক্ষণ বাস্তবেই নিন্দনীয়। তিনি যুক্তি দেখান যে, ইউক্রেনের কিছু কর্মকর্তার মানসিকতা সেই মধ্যযুগে রয়ে গেছে। মারিয়া শাপ্রানোভা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে যৌনতাবাদী এবং বহুগামিতাবাদী বলে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি লিখেছেন, সৌন্দর্য্য বিষয়ক শিল্প থেকে হাই হিল চাপিয়ে দেয়াটা হলো নারীদের সঙ্গে এক রকম মস্করা।

পার্লামেন্টেও তুমুল বিতর্ক হয়েছে। ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কোর খুব ঘনিষ্ঠ এমন কিছু ইউক্রেনীয় আইন প্রণেতা পার্লামেন্টের ভিতর তাদের জুতা প্রদর্শন করেছেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে উৎসাহিত করেছেন স্বাধীনতার বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে হাই-হিল পরে উপস্থিত হতে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা তুলে ধরে গোলোস পার্টির একজন সদস্য ইন্না সোভসান বলেছেন, এটা যে কতটা বোকামি, ক্ষতিকর আইডিয়া তা কল্পনা করাও কঠিন। তিনি বলেন, পুরুষদের মতো ইউক্রেনের নারী সেনারাও তাদের জীবনের ঝুঁকি নেন এবং তাদেরকে নিয়ে মস্করা করা হোক এমনটা তাদের পাওনা হতে পারে না। পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ওলেনা কোন্দ্রাতুক বলেছেন, নারীদের অবমাননা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।