সেলিনা হোসেন। বাংলাদেশের এক জন প্রখ্যাত নারী ঔপন্যাসিক। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৪ ই জুন, ১৯৪৭ ইং সালে রাজশাহীতে। তাঁর পৈতৃক নিবাস লক্ষ্মীপুর জেলার হাজিরপাড়া গ্রাম। বাবা এ কে মোশাররফ হোসেন এবং মা মরিয়মন্নেসা বকুল। তিনি পিতা মাতার চতুর্থ সন্তান।তাঁর উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব্ব সংকটের সামগ্রিকতা। বাঙালির অহংকার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান হিসেবে দু’ বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি।
সেলিনা হোসেনের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৭০ সালে বাংলা অ্যাকাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে। তিনি ১৯৬৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে চাকরি পাওয়ার আগে পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকাতে উপসম্পাদকীয়তে নিয়মিত লিখতেন। ১৯৭০ সালে দু’টো চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য চিঠি পান। একটি বাংলা অ্যাকাডেমিতে অন্যটি পাবলিক সার্ভির্স কমিশন থেকে সরকারি কলেজের জন্য। বাংলা অ্যাকাডেমীর চাকরির ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন বাংলা অ্যাকাডেমির তৎকালীন পরিচালক কবীর চৌধুরী, ড. মুহম্মদ এনামুল হক, ড. নীলিমা ইব্রাহিম, আবদুল্লাহ আলমুতি শরফুদ্দিন প্রমুখ। এর পাশাপাশি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে সরকারি কলেজের চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে বোর্ডে শহিদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীকে পান। কর্মরত অবস্থায় তিনি বাংলা অ্যাকাডেমির ‘অভিধান প্রকল্প’, ‘বিজ্ঞান বিশ্বকোষ প্রকল্প’, ‘বিখ্যাত লেখকদের রচনাবলি প্রকাশ’, ‘লেখক অভিধান’, ‘চরিতাভিধান’ এবং ‘একশত এক সিরিজের’ গ্রন্থগুলো প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও ২০ বছরেরও বেশি সময় ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা অ্যাকাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকুরি থেকে অবসর নেন। প্রথম গল্পগ্রন্থ উৎস থেকে নিরন্তর প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। ভ্রমণ তাঁর নেশা। তাঁর মোট উপন্যাসের সংখ্যা ২১টি, গল্প গ্রন্থ ৭টি এবং প্রবন্ধের গ্রন্থ ৪টি। বহু পুরস্কার পেয়েছেন সেলিনা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ইত্যাদি।