চাঁদে জমি কিনবেন? পাবেন দলিলও

ছেলেবেলায় আমাদের কল্পরাজ্যে চাঁদের বুড়ির অবয়ব তৈরি করে দেওয়া হয়। শিশুমন ধরেই নেয়- চাঁদের মালিক হল সেই বুড়ি। সেখানে বসে চরকায় সুতা কাটা তার একমাত্র কাজ! কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে চাঁদ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। যেহেতু এখন অনেকেই চাঁদে এক টুকরো জমির মালিকানার কথা ভাবছেন, তাই জেনে রাখা ভালো- চাঁদে জমি বিক্রি অবৈধ। তা সত্ত্বেও চাঁদের জমি বিক্রি করেন ডেনিস হোপ। প্রতি একর জমির দাম শুরু ২৫ ডলার থেকে। জমি কিনলেও তা চোখে দেখার সুযোগ প্রায় নেই।
তাই দলিলের সঙ্গে ক্রেতাদের একটি করে চাঁদের মানচিত্র দেন হোপ। যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন ঠিক কোন জায়গায় জমি কিনলেন। জমির মালিকানা নাকি আইনত বৈধ। আছে দলিল। এমনকি মৌজা-পরচার মতো আইনি নথিও। এ পর্যন্ত নাকি ৬০ লক্ষেরও বেশি ক্রেতাকে চাঁদের ৬১.১ কোটি একর জমি বিক্রি করেছেন হোপ। ১৯৭৯ সালে চাঁদ এবং মহাশূন্যের অন্যান্য বস্তুতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সমঝোতা প্রস্তাব আনে জাতিসংঘ; যেটি ‘মুন এগ্রিমেন্ট’ নামে পরিচিত। সেখানে মূল বিষয়গুলো ছিল, এসব কর্মকাণ্ড হতে হবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এবং কোনো মহাকাশ স্টেশন বানাতে হলে আগে জাতিসংঘকে জানাতে হবে। ওই চুক্তিতে আরও বলা হয়েছিল, চাঁদ এবং এর যে কোনো প্রাকৃতিক সম্পত্তিতে মানব সভ্যতার সবার সমান অধিকার থাকবে। তবে সমস্যা হল, মাত্র ১১টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চিন এবং রাশিয়ার মতো মহাকাশ গবেষণার প্রধান দেশগুলো চুক্তিটি সমর্থন করেনি। বলা হয়ে থাকে, চুক্তির ফাঁক কাজে লাগিয়ে চাঁদে জমি বিক্রি হচ্ছে। যার মধ্যে আছে এই হোপের নাম। ক্রেতার ব্যাপারে কোনও বাছবিচার নেই এই ডেনিস হোপের। তারকা থেকে সাধারণ চাকুরিজীবী— সবাই রয়েছেন তাঁর ক্রেতার তালিকায়। তাঁর দাবি, ৬৭৫ জন নামী তারকা জমি কিনেছেন তাঁর কাছ থেকে। এঁদের মধ্যে নাকি রয়েছেন আমেরিকার তিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, জিমি কার্টার এবং রোনাল্ড রেগনও।